Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সঞ্চয়পত্রের পরিবর্তে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করুন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ অক্টোবর ২০২২ ২০:৫১

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমরা চাই মানুষ টাকা নিয়ে পুঁজিবাজারে আসুক। এতে দেশ বেশি উপকৃত হবে। পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করলে দেশে শিল্পায়নে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের পরিবর্তে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে লোকসান হবে না। এতে করে উভয়ের উইন উইন সিচুয়েশন হবে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) উদ্যোগে আয়োজিত বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন- বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ‘এখন আর সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ ততটা আকর্ষণীয় নয়। বরং এর পরিবর্তে কোনো বিনিয়োগকারী যদি বন্ড মার্কেটে বিনিয়োগ করেন, তাহলে তিনি বেশি লাভ পাবেন। আমরা এই কাজটা করতে পেরেছি। আমরা চাই মানুষ টাকা নিয়ে পুঁজিবাজারে আসুক। যাতে করে এই টাকা নিয়ে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন।’

পুঁজিবাজার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সবধরনের সহযোগিতা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। এই ঋণ খেলাপি হওয়ার অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো- ব্যাংকগুলো স্বল্প মেয়াদে আমনত সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করছে। এতে করে তাদের স্বল্প সময়ে ঋণ পরিশোধের কথা থাকলেও তা ফেরত দিতে পারছেন না। ফলে ঋণগুলো খেলাপি হয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি পাশের দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা কিংবা থাইল্যান্ডের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব- উদ্যেক্তারা পুঁজি তোলে পুঁজিবাজার থেকে। যাকে আমরা টার্ম ঋণ বলি। সেইসঙ্গে তারা ব্যাংক থেকে নেয় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বা ট্রেড ফাইন্যান্স। এসব নিয়ে তারা ব্যবসা করে। আমাদের এখানে উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল, এমনকি ট্রেড ফাইন্যান্সও নেয়। ফলে ব্যাংকের ওপর বড়ধরনের চাপ পড়ে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ‘বন্ড মার্কেটের বিকাশে বড় বাধা ছিল সঞ্চয়পত্র। সঞ্চয়পত্রের অনেক বেশি সুদ দেওয়া হতো এবং টাকা জমা রাখার কোনো ক্যাপ (সীমা) ছিল না। যদিও বলা হতো ৫০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। কিন্তু তার সঠিক কোনো প্রয়োগ ছিল না। নিয়ম আছে যে, এক ব্যক্তি ৫০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। কিন্তু আগে অটোমেশন না থাকায় এক ব্যক্তি একাধিক ব্যাংক থেকে কয়েকবার ৫০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারতেন। কিন্তু এখন অটোমেশন হওয়ায় সেই সুযোগ আর নেই। আমরা এমন লোকও দেখেছি যাদের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী ১৪৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে ৪১ হাজার কোটি টাকা নেট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। সঞ্চয়পত্রে বিনিযোগকারীদের অনেক বেশি সুদ দেওয়া হতো। সঞ্চয়পত্রের এই সুদ আমার-আপনার ট্যাক্সের পয়সা থেকে দেওয়া হয়। গরিব মানুষের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে বড় লোকের বিনিয়োগের লাভ দেওয়া হয়। আমরা দায়িত্ব নিয়ে সঞ্চয়পত্র ক্রয় অটোমেশন করেছি। ফলে এখন কেউ চাইলেও ৫০ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি বন্ড মার্কেট উন্নয়ন করতে পারি তাহলে উদ্যেক্তারা সেখানে যাবেন। ইতোমধ্যে অনেক ব্যাংক বন্ড ইস্যু করছে। এক সময় এক ব্যাংক বন্ড ইস্যু করতো, আরেক ব্যাংক তা কিনে নিত। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। বর্তমানে একটি ব্যাংক অন্য ব্যাংকের ৫০ শতাংশ বন্ড কিনতে পারছে। বাকি ৫০ শতাংশ বাইরে বিক্রি করতে হবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকের বন্ড সবচেয়ে নিরাপদ। কারণ, বাংলাদেশ গত ৫০ বছরে কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়নি। আগামী ৫০ বছরেও কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হবে না।’

আব্দুর রউফ বলেন, ‘সরকারি ট্রেজারি বন্ড ও যে বিলগুলো আছে সেগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনের জন্য একটা অটোমেশন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে। এটা অনেক ভালো কাজ হয়েছে। ফলে সরকারি ট্রেজারি বন্ডগুলো ট্রায়াল বেসিসে আগামী রোববার থেকে লেনদেন হবে।’

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

গভর্নর টপ নিউজ পুঁজিবাজার বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছেই
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০০

সম্পর্কিত খবর