Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির, সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন

আলতাফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ অক্টোবর ২০২২ ০৮:১৮

পুরান বাজার জামে মসজিদ মসজিদ ও কালীবাড়ী মন্দির, ছবি: জামাল বাদশা

লালমনিরহাট: একই উঠানে মসজিদ ও মন্দির। এক পাশে ধূপ-ধুনোর গন্ধ, অন্য পাশে আতরের সুঘ্রাণ। এক পাশে উলুধ্বনি, আর অন্য পাশে চলে জিকির। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শহরের কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার জামে মসজিদ ও কালীবাড়ী কেন্দ্রীয় মন্দির। যে যার মতো ধর্ম পালন করে চলেছেন এই দুই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। এখন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এভাবেই যুগ যুগ ধরে ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলছে উপাসনালয় দু’টি।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানান, ১৮৩৬ সালে কালী মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় লালমনিরহাট শহরে কালীবাড়ী এলাকার পুরান বাজার এলাকায় বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ করার জন্য তার পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। আর সেটির নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ হিসেবে। ওই সময় থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কাজ। পূজা শুরুর আগে মসজিদ ও মন্দির কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেন। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন

মন্দির ও মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে সাধারণ মানুষ। কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও এই মন্দির ও মসজিদ পরিদর্শন করেছেন।

জানা গেছে, আজানের সময় থেকে নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের যাইক, ঢাক ঢোলসহ যাবতীয় শব্দ বন্ধ থাকে। নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। এখানে কোনো বিশৃঙ্খলাও হয় না। শালীনতা বজায় রেখে একই উঠানে যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন উৎসব পালন করে আসছেন উভয় ধর্মের মানুষ।

ওই এলাকায় ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান, লালমনিরহাটে ধর্মীয় সম্প্রীতির এটি একটি জ্বলন্ত উদাহরণ। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এ সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করছেন তারা। সত্যি এটি আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের বিষয়।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী পুরান বাজার মসজিদের পাশেই একসঙ্গে দু’টি প্রতিষ্ঠান। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবুও এখানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবশ্রেণির মানুষ স্বাধীনভাবে ঘুরতে আসে। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি। তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন। নামাজের সময় মন্দিরের ঢাক-ঢোল বন্ধ রাখা হয়। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলছে।’

কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ী। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে এক উঠানে চলছে দুই ধর্মের দুই উপাসনালয়ের কার্যক্রম। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবে চলতে দেখেছি।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করেন। যার প্রমাণ এক উঠানে কেন্দ্রীয় কালীবাড়ী মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ।’

সারাবাংলা/এনএস

এক আঙিনায় মসজিদ-মন্দির লালমনিরহাট শারদীয় দুর্গোৎসব

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে রুখে দিল নিউক্যাসেল
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৮

সম্পর্কিত খবর