প্রণোদনার বাজার ফেয়ার হওয়া উচিত: পরিকল্পনামন্ত্রী
৪ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৫৬
ঢাকা: প্রণোদনার বাজার ফেয়ার হওয়া উচিত বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, শুধু পোশাক খাত বা বড় বড় খাতে প্রণোদনা দিলে হবে না। যাদের লবিংয়ের শক্তি বেশি তারা বেশি প্রণোদনা পাবে- এটা ঠিক নয়। প্রণোদনার মধ্যে একটা কায়েমি স্বার্থ আছে। অনেক ব্যবসা শেষ হলেও প্রণোদনা অব্যাহত আছে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ম্যান মেইড ফাইবার ফর মুভিং আপ দ্য ভ্যালু চেইন অব আরএমজি ইন দ্য কনটেক্স অব এলডিসি গ্রাজুয়েশন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পর আমাদের বাজার সমস্যা বেশি হবে। সেইসঙ্গে অস্থিরতাতো আছেই। ভূরাজনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর সঙ্গে আমরা পরিচিত ছিলাম না। তবে এলডিসি উত্তরণের ফলে যাতে কম ব্যাথা পেতে পারি সে বিষয়ে পথ খুঁজে বের করা হচ্ছে। কর্মশালায় বলা হয়েছে, আগামীতে বিশ্বব্যাপী কটনের তৈরি পোশাক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে। এর বিপরীতে কৃত্রিম তন্তুর (ম্যান মেইড ফাইবার) তৈরি পণ্যে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নীতিমালা ও অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন সুবিধার কথা বলেছেন সংশ্লিষ্টরা। আমাদের সরকার অবশ্যই সেই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যা যা করা দরকার করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স কমেছে বিষয়টি আমি জেনে খুব ধাক্কা খেয়েছি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, এটা নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আগামী মাসেই হয়তো আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে রেমিট্যান্স। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন একটা অস্থিরতা চলছে। এ অবস্থায় বায়ার ও সেলার কেউই বুঝতে পারছে না কী হবে। ফলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ যাই হোক না কেন মানুষকে তো কাপড় পড়তে হবে। সুতরাং ব্যবসা যেভাবেই হোক চলবে।’
কৃত্রিম তন্তুর পণ্য তৈরির উদ্যোক্তারা ১০ শতাংশ ক্যাশ ইনসেনটিভ চেয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আজকের কর্মশালায় রাজস্ব বোর্ডর কর্মকর্তারাও ছিলেন। আলাপ-আলোচনার পর কতটুকু কী করা যায় সে বিষয়ে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, ‘সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি কমেছে। এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করা হবে।’ ব্যবসায়ীরা সরকারি অফিসগুলোতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর এই জঙ্গলে আমিওতো বসবাস করি। অন্য প্রাণির মতো আমিও থাকি। ফলে সবকিছুর বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখি। ধীরে ধীরে বিষয়টির উন্নতি হবে। একে অপরের প্রতিন্দ্বী হলে চলবে না। সহযোগী হতে হবে।’
কর্মশালায় এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী তৈরি পোশাক খাতের চ্যালেঞ্জ এবং এর সম্ভাব্য প্রস্তুতির বিষয়টি উঠে আসে সংশ্লিষ্টদের আলোচনায়। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি কৃত্রিম তন্তু ও তৈরি পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা দাবি করা হয়।
ইআরডির সচিব শরিফা খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোহাম্মদ মাহবুবুল হক, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান। বক্তব্য দেন- সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন প্রজেক্ট’র পরিচালক অতিরিক্ত সচিব ফরিদ আজিজ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিড’র চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক এবং বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ আশরাফ।
সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম