বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে মাঠে তদন্ত কমিটি
৫ অক্টোবর ২০২২ ২৩:২৯
ঢাকা: জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
বুধবার (৫ অক্টোবর) সকালে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। এ সময় পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিটি ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম পরিদর্শন করে।
প্রায় তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন মেশিনারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় সেখান থেকে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেয় তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী জানান, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দেশের কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার কন্ট্রোল রুমগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সবকটির পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কী কারণে বিপর্যয় দেখা দেয়, তা জানা যাবে।
ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনে পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালকের সঙ্গে সংস্থার পরামর্শক শামছুর জোহা, নির্বাহী প্রকৌশলী আরেফিন সিদ্দিক, সাইদুল ইসলামসহ তদন্ত কমিটির ৬ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ইয়াকুব এলাহী সেখানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল প্রত্যেকটি পাওয়ার প্লান্টেই কিছু না কিছু ঘটেছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ঘুরে আমরা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছি। এগুলো পর্যালোচনা করা হবে।’
জাতীয় গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ কী ছিল- প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখনই স্পষ্ট কিছু বলা যাবে না। সব বিষয়ে তদন্ত চলছে।’
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রায় এক ঘণ্টা সময়ের জন্য জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় হয়েছিল। ওই ঘটনায়ও ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল।
পিজিসিবির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সেই কমিটির প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আক্রান্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে ঘোড়াশালে ৫ নম্বর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ইউনিটটি চালু করতে কাজ চলছে।
এর আগে, দেশের চার বিভাগে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) নির্বাহী পরিচালক (পি অ্যান্ড ডি) ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী ছয় সদস্যের একটি কমিটির নেতৃত্বে আছেন।
এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগকে আরও দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনের পূর্বাঞ্চলে বিভ্রাটের কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের অর্ধেক অঞ্চলের বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ ফেরাতে কাজ শুরু করেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে রাত ১০টা বেজে যায়।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজে বলা হয়, অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
ওই ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গ্রাহকদের ‘একটু ধর্য্য ধরার জন্য’ অনুরোধ করেছেন।
সারাবাংলা/একে