৩৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্ত ও উন্নত হচ্ছে টুঙ্গিপাড়ার সড়ক
৭ অক্টোবর ২০২২ ১২:৪৩
ঢাকা: প্রশস্ত ও উন্নত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়া যাওয়ার সড়ক। এজন্য ‘ঘোনাপাড়া হতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ (শেখ লুৎফর রহমান সেতু অ্যাপ্রোচসহ) সড়কাংশ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৭ কোটি ৪ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত সড়ক যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীতকরণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধসহ প্রকল্প এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর।’
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়, ঘোনাপাড়া হতে টুঙ্গিপাড়া সড়কটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রধান সড়ক। এরমধ্যে ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত সড়কটি রোড টু ফ্রিডমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সড়কটি ব্যবহার করে সমগ্র দেশের জনগণ প্রতিনিয়ত জাতির পিতার সমাধি জিয়ারতে আসেন।
এছাড়া এই সড়কের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে শিক্ষা সফরের যানবাহন চলাচল করে। এই অংশে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তার মধ্যে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল, শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গোবরা রেলস্টেশন লিংক রোড, বিআরটিসি ট্রেনিঙ ইনস্টিটিউট ও বাস ডিপো, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদ, টেকনিক্রার কলেজ, শেখ রাসেল এতিম খানা, শহীদ শেখ জামাল যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং সেন্টার, ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু হাসপাতাল, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফায়ার সার্ভিস অফিস, টুঙ্গিপাড়া পৌর ঈদগাহ ময়দান, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত জিটি স্কুল, টুঙ্গিপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড, সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ, ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙ্গা মাদরাসা অন্যতম।
এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার পরও এই সড়কের বর্তমান প্রস্থ ৭.৩ মিটার অর্থাৎ ২৪ ফুট, যা চাহিদার তুলনায অপ্রতুল। এ অবস্থায় টুঙ্গিপাড়া-ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ১৬.৩৬৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৭.৪৬৪ কিলোমিটার সড়কের উভয় পাশে ধীরগতি লেনসহ প্রস্তাবিত সড়কটি যথাযথ মানে ও প্রস্থে উন্নীতকরণের জন্য প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু সমাধিস্থলের এলাকায় আশপাশের এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্ন ঘটায় এমন কাজ করা যাবে না। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই সড়কের এ্যালাইনমেন্ট বা ডিজাইন পুর্নবিন্যাস করতে হবে। এ সুপারিশ মেনে সড়কের দৈর্ঘ্য ১৬.৩৬ কিলোমিটার অপরিবর্তিত রেখে জেনারেল সাইট ফ্যাসিলিটিস ও বিদ্যমান কালভার্ট প্রশস্তকরণের ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়। সেই সঙ্গে নতুন অঙ্গ হিসেবে দোকান নির্মাণ অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া পার্কিং জোন নির্মাণ ব্যয় ও আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের পরিমাণ ও ব্যয় কমিয়ে ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) শিরোনাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিত কর্মকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ১৬.৩৬৬ কিলোমিটার সড়ক যথাযথ মান ও প্রস্থে উন্নীত করা হবে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপনসহ প্রকল্প এলাকার জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।’
সারাবাংলা/জেজে/এমও