Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশকে ফাঁকি দিতে ‘বিকাশ অ্যাপস’, অপরাধী চক্রের কৌশল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ অক্টোবর ২০২২ ১৬:০৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মোবাইল ভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘বিকাশ অ্যাপসের’ মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে অপরাধ সংঘটিত করে আসা একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। মাছ ধরার ট্রলারের এক মাঝিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে অপরাধ সংঘটনের তথ্য মেলে।

বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর বন্দর-পতেঙ্গা এবং হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। ফটিকছড়ির দুর্গম লেলাং পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত কামরুল হোসেনকে (৪২)।

গ্রেফতার তিনজন হলেন- ছখিনা বেগম মর্জিনা (৪৬), শাহজাহান জয় (৩০) ও কণা বেগম (৩০)।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে জানান, ৪ অক্টোবর নগরীর ফিশারিঘাট থেকে কামরুলকে একটি গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা। তাকে নিয়ে ফটিকছড়ির একটি পাহাড়ে আটকে রাখে। এর আগে তার সঙ্গে কয়েকজন নারীর অশ্লীল ছবি তুলে সেই ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ ঘটনায় ট্রলার মালিক শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন।

‘অপহরণকারী চক্রকে দুই লাখ টাকা পরিশোধ করেন ট্রলার মালিক। এরপরও যখন কামরুলকে মুক্তি দেয়া হচ্ছিল না, তখন তারা থানায় আসেন। আমরা অপরাধীদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারের পর ভিকটিমকে উদ্ধার করি। দুই লাখ টাকা থেকে ৮২ হাজার ৪০০ টাকা উদ্ধার করি।’- বলেন ওসি।

অভিযানে অংশ নেয়া কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ভিকটিম ও অপহরণকারীদের অবস্থান শনাক্ত করতে গিয়ে আমরা সমস্যায় পড়ি। কারণ তারা দুই লাখ টাকা নিয়েছে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে। সেখানে মোবাইল নম্বর থাকলেও সিম খুলে রাখা হয়। আরও একটি অ্যাপসের তথ্য পাই, সেটাতেও একইভাবে সিম পাওয়া যায়নি। যার কারণে কোনোভাবেই অবস্থান শনাক্ত করতে পারছিলাম না। এরপর গ্রেফতার শাহাজাহানের একটি পারসোনাল বিকাশ নম্বর ও একটি এজেন্ট নম্বর পাই। এর মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করি।’

বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করে পুলিশকে ফাঁকি দেয়ার কৌশলের তথ্য দিয়ে এসআই মোমিনুল বলেন, ‘মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাপস খুলে যদি সিমটা সেই মোবাইলে না থাকে তাহলে অবস্থান শনাক্ত করা যায় না। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই কৌশলের কথা স্বীকার করেছে।

তারা জানিয়েছে, পুলিশ যাতে তাদের ধরতে না পারে সেজন্য তারা এই কৌশল অবলম্বন করে। একই কৌশলে তারা কয়েক মাস আগে বিমানবন্দর থেকে এক আইনজীবীর বাবাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে। আরও ৭-৮টি এ ধরনের ঘটনা তারা ঘটায়, যার সবগুলোই বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে। কিন্তু সিম মোবাইলে না থাকায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না।’

গ্রেফতার তিনজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।

সারাবাংলা/আরডি/এনকে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর