বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজতে হবে: তাজুল ইসলাম
৮ অক্টোবর ২০২২ ১৭:২৩
ঢাকা: সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী এবং কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
শনিবার (৮ অক্টোবর) এফবিসিসিআই ও ইউনিলিভার বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘প্লাস্টিক বর্জ্যের টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য নীতি সহায়তা’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বর্জ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি লাভজনক ব্যবসায়িক উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করা গেলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে টেকসই করা যাবে। এ ক্ষেত্রে সার্কুলার বা চক্রাকার প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই কার্যকর সমাধান।’
সার্কুলার প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ভ্যালু চেইনের অংশীদারদের ক্ষমতায়ন ও অনানুষ্ঠানিক খাতকে সামগ্রিক সহযোগিতা করার ব্যাপারে গুরুত্ব আরোপ করেন। ভ্যালু চেইনে অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, ভাঙ্গারি ও বর্জ্য সংগ্রাহকরা রয়েছেন। এই খাতটি অনানুষ্ঠানিক হলেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত উল্লেখ করে এই খাতে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি, একই সঙ্গে পরিবেশ ও অর্থনীতির স্বার্থেই টেকসই প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি উপযোগী কাঠামো তৈরির তাগিদ দেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি জটিল প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে বহু অংশীজন ও খাত সম্পৃক্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ও ব্র্যান্ডগুলোর সাথে সমন্বিত উদ্যোগে নীতি প্রণয়ন জরুরি।’
এ ছাড়া একটি সার্কুলার বা চক্রাকার প্লাস্টিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত কর্মকৌশল চিহ্নিত করতে হবে। এবং কার্যকর প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সরকারি ও বেসরকারিখাতগুলোকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে টেকসই প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন পরিবেশ মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানান, ভিশন ২০৪১-এ টেকসই নগরায়ন নগরায়ন লক্ষ্যের অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ হিসেবে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে প্লাস্টিক বর্জ্যকে টেকসই উপায়ে পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘জিডিপি বৃদ্ধির সঙ্গে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়াটা স্বাভাবিক। তবে প্লাস্টিক বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব এই খাতে মূল চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে উন্নত দেশের মত বর্জ্যের উৎসে এগুলোকে আলাদা করার সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। কেননা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার টেকসই মডেল বাস্তবায়নে উৎসে পৃথকীকরণ সবচেয়ে জরুরি বিষয়। উৎসেই বিভিন্ন বর্জ্য পৃথক করা হলে পুরো ‘সংগ্রহ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাত প্রক্রিয়া’কে আরও সহজ করে তুলবে।’
ইউনিলিভার বাংলাদেশের সিইও ও এমডি জাভেদ আখতার বলেন, ‘আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে সিটি করপোরেশনগুলোর সঙ্গে বেশকিছু পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এই উদ্যোগগুলো যথাযথ সুবিধা ও সহযোগীতা না পেলে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এই ধরনের উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত হবেনা। এ জন্য পুরো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে এবং অবদান রাখতে হবে। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে ভ্যালু চেইনে মূল্য সংযোজন করে সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ