বিরোধীদলীয় নেতা রওশন না কাদের তা আগামী অধিবেশনে নিষ্পত্তি
১০ অক্টোবর ২০২২ ১৯:১৫
ঢাকা: জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন নিয়ে জাতীয় পার্টিতে তোলপাড়। কে বসবেন বিরোধী দলের নেতার চেয়ারে- রওশন এরশাদ নাকি জি এম কাদের সে বিষয়ে এখনও সুরাহা হয়নি। তবে আগামী সংসদ অধিবেশনে বিরোধীদলীয় নেতার বিষয়টি চূড়ান্ত হবে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির দলীয় একাধিক এমপি জানিয়েছেন— নিয়ম কানুন অনুযায়ী জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনীত করা হয়নি। এছাড়া স্পিকারের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত জি এম কাদেরকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বলে গ্রহণ করেননি এবং কোনো সিন্ধান্ত আসেনি। এ বিষয়ে আসন্ন অধিবেশনে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ফলে এখনও বেগম রওশন এরশাদ বিরোধীদলের নেতার পদে আছেন বলে সংসদ সচিবালয় সূত্র থেকে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি জাতীয় পার্টিও সংসদীয় দলের বৈঠকে জি এম কাদেরকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের নেতা হিসেবে মনোনীত করা হয়। গত ৮ অক্টোবর প্রেসিডিয়াম সভায় জি এম কাদেরের বিরোধীদলীয় নেতা মনোনয়ন করাকে সম্মতি দেন প্রেসিডিয়াম সদস্যরা।
সূত্রটি জানায়, নিয়মে রয়েছে সংসদীয় দলের সভা বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতিতে বিরোধী দলীয় উপনেতার নির্দেশক্রমে চিপ হুইপ সভা আহ্বান করবেন। সভা ডাকার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি অনুপস্থিতসহ আরও কিছু অনিয়ম রয়েছে বলে সূত্রটি দাবি করেন। ফলে বিরোধীদলীয় নেতা মনোনীত করার বিষয়ে আবারও ত্রুটি এবং জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ সব বিষয় নিয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতার বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিরোধীদলীয় নেতা মনোনীত করার নিয়ম কানুন এবং খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি আমার কাছে পেন্ডিং আছে।’
অপরদিকে জাতীয় সংসদের আইন শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ নিয়ম অনুসারে বহাল রয়েছে। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসাবে অন্য কারও নাম নেই তাদের কাছে।
আইন শাখা থেকে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর বেগম রওশন এরশাদকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ যে চিঠি স্পিকারের কাছে দিয়েছিলেন সে চিঠি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বেগম রওশন এরশাদই বিরোধীদলের নেতা থেকে যান।
অপরদিকে গত শনিবার ৮ অক্টোবর জাতীয় পার্টির দলীয় এমপি এবং প্রেসিডিয়াম সদস্যদের যৌথ বৈঠকে দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে বিরোধী দলীয় নেতা মনোনীত করার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সাংবিধানিক ও কার্যপ্রণালি বিধি অনুযায়ী বিরোধীদলীয় নেতা মনোনীত করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কেউ প্রশ্ন করেনি। তবে প্রশ্নটি সবার মাঝে জেগেছে বলে জানান জাপা একজন এমপি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে রওশন এরশাদ দলের কাউন্সিল ডাকার পর একদিনের মধ্যে রওশন এরশাদকে বিরোধীদলের নেতার পদ থেকে সরিয়ে সরিয়ে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)।
এ জন্য দলটির কয়েকজন সংসদ সদস্য বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠিও দিয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশনে মাগরিবের নামাজের বিরতির সময় চুন্নু, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, সালমা ইসলাম, ফখরুল ইমামসহ ৬/৭জন সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্তের কথা স্পিকারকে জানান।
এ ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ারর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর। তবে দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিলে স্পিকার সাধারণত সেটি অনুমোদন করেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে