‘প্রাথমিক ধাপে ক্যানসার ধরা পড়লে প্রতিরোধ সম্ভব’
১১ অক্টোবর ২০২২ ০০:৪৬
ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম বলেছেন, ক্যানসার হওয়ার পরে নয়, আগে থেকে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য যেতে হবে। প্রাথমিক ধাপে ক্যানসার ধরা পড়লে প্রতিরোধ করা সম্ভব। আমরা মুখে বলি, কিন্তু কাজ করি না। যারা সচেতনতায় কাজ করেন তারাও সবাই এই স্ক্রিনিং করি না।
সোমবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে ক্যানসার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ক্যানসারবিরোধী ও নারী সংগঠনসহ ৩৫টি সংগঠনের মোর্চা ‘বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম’ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে নাছিমা বেগম বলেন, ‘নারীর শরীর সময়ের পরিক্রমায় পরিবর্তন আসবে। এটি নিয়ে ভিত হওয়া যাবে না। অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। সমস্যা বেশি হলে ডাক্তারের কাছে যাবেন। থেরাপি না নিয়ে অন্যান্য স্বাভাবিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএসএমএমইউতে কতিপয় দালালের কারণে গ্রাম থেকে আসা রোগীদের পরীক্ষায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা যায় লাইন শেষ করে জায়গায় পৌঁছাতে ছয়/সাত দিন লেগে যায়। বিষয়টি ডাক্তারদের খতিয়ে দেখা উচিত।’
বিএসএমএমইউয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ছয়েফ উদ্দিন বলেন, ‘যারা ক্যানসারে আক্রান্ত হন তাদের যেন গণমাধ্যমে প্রথমেই প্রকাশ না করা হয়। কিছু বিষয় যেন গোপন থাকে। সচেতনতার পাশাপাশি আমরা যেন প্রচার করে কারও ক্ষতি না করে ফেলি। নারীরা এখনও চার দেয়ালের মধ্যেই আছে। হয়ত এক/দুই শতাংশ বেরিয়ে এসেছেন।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী ডা. হাবিবুল্লাহ রাসকিন। তিনি বলেন, ‘দেশের ৮০ ভাগ নারী স্তন ক্যানসার সম্পর্কে জানেন না। আর যে ২০ ভাগ জানেন তারাও নিয়মিত চেকআপ করান না। অনেক নারী স্ক্রিনিং না করার কারণে যথাসময়ে এ রোগ শনাক্ত হয় না। ফলে মৃত্যু অবধারিত হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিঃসন্তান নারী ও ৩০ বছরের পরে সন্তান নেওয়া নারীদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া চর্বি ও প্রাণিজ খাবার বেশি খাওয়া ও অতিরিক্ত ওজনও স্তন এই মরণব্যাধির কারণ। এজন্য স্তন ক্যানসার সুরক্ষায় ২০ বছর বয়স থেকে প্রতিমাসে একবার স্তন স্ক্রিনিং করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে স্তন ক্যানসার নিরাময় শতভাগ সম্ভব।’
অনুষ্ঠানে গবেষক ড. হালিদা হানুম আখতার বলেন, ‘প্রতি ৫ হাজারে একজন নারী ব্রেস্ট ক্যানসারে ভোগেন। ৬০ শতাংশ নারী জরায়ু ক্যানসার সম্পর্কে জানেন আর ২৪ শতাংশ স্তন ক্যানসার সম্পর্কে জানেন। এছাড়া ডায়াগনোসিস ও স্ক্রিনিং সম্পর্কে খুব অল্প নারীই জানেন। স্তন ক্যানসারে নারী সচেতনতার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদেরকেও জানাতে হবে। তাদেরকে সচেতন করতে হবে আগে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন, অধ্যাপক মোজাহেরুল হক, অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ, ড. হালিদা হানুম আখতার প্রমুখ।
আলোচনা সভার আগে সংগঠনটি সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত শোভাযাত্রা করে এবং রাস্তায় সাধারণ মানুষের কাছে স্তন ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতামূলক তথ্যসমৃদ্ধ লিফলেট বিতরণ করে।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম