অসময়ের টমেটোতে ‘অনেক লাভ’, বাড়ছে চাষে আগ্রহ
১১ অক্টোবর ২০২২ ০৯:৫৪
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে টমেটো আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন কৃষক সামিউল ইসলাম। শীতকালীন এই সবজি অসময়ে চাষ করে অনেক লাভও পেয়েছেন তিনি। তার সফলতা দেখে এই জাতের টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আশপাশের চাষিরাও।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ইছাপুর গ্রামে অসময়ে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করছেন সামিউল ইসলাম। তিনি অসময়ে এক বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ করেছেন। এই টমেটো মৌসুমের চেয়ে কম আবাদ হলেও দাম বেশি ও চাহিদা থাকায় বেশি লাভ পাচ্ছেন তিনি। গ্রীষ্মকালীন ও আগাম জাতের সবজিতে বেশি লাভ হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরাও টমেটো চাষের কথা চিন্তা করছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলে এবার গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ হয়েছে ১০৫ শতাংশ। এর মধ্যে কালিহাতী উপজেলার সামিউল আবাদ করেছেন ৩৩ শতাংশ। যেখানে সে প্রায় ২৫০০ টমেটোর চারা রয়েছে। সামিউল অসময়ে তরমুজ, করলা ও বাঙ্গি আবাদ করেও লাভ পেয়েছেন। এলাকার অনেকেই এখন গ্রীষ্মকালীন ও অসময়ে সবজি আবাদ করার জন্য তার কাছ থেকে হাতেকলমে শিক্ষা নিচ্ছেন।
সামিউল ইসলাম জানান, গত বছর থেকে তিনি টমেটো আবাদ শুরু করেন। এ বছরও আবাদ করেছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন এই সবজি কৃষি অফিসের পরামর্শ ও নিয়ম অনুযায়ী চাষ করায় পচন থেকে রক্ষা পেয়েছে। এবছর এক বিঘায় ২৫০০ চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রতি গাছ থেকে দেড় থেকে দুই কেজি টমেটো পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। এতে এবার ৫ মেট্রিক টন টমেটো বিক্রি করা যাবে।
বাজারে এখন টমেটো ১৩০-১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সামিউল পাইকারি বাজারে তা ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। অসময়ে টমেটো আবাদ খুব কষ্টকর। কারণ এই সময় বৃষ্টি থাকে বেশি। বৃষ্টির কারণে মালচিং পদ্ধতিতে আবাদ করতে হয়েছে তাকে।
এলাকার জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিভিন্ন মৌসুমী ফসল আবাদ করি। সামিউলের এখানে মাঝেমধ্যেই আসি। তার আবাদ করার ধরন অন্যরকম। সে কৃষি অফিস থেকে ট্রেনিং নিয়ে এই সবজি আবাদ করে থাকে। তার অসময়ে সবজি আবাদ দেখে আমারও আবাদ করার ইচ্ছা জেগেছে। আমি তার কাছ থেকে চাষের পদ্ধতি শিখতেছি।’
আরেক কৃষক নওশের মিয়া বলেন, ‘আমারও ইচ্ছা আছে টমেটো আবাদ করার, তাই এ বছর আমি সামিউল ভাইয়ের সঙ্গে থেকে কাজ করে শিখতেছি। আগামী বছর আমিও আবাদ করবো।’
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আহসানুল বাশার জানান, কৃষি অফিস তাকে সার ও বীজ সহায়তা দিয়েছে। এই সহায়তার পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে গ্রীষ্মকালীন সবজি বারি-৪ ও বারি-৮ জাতের টমেটো আবাদ করেছেন সামিউল। এই সময় সবজি আবাদ খুব কষ্টসাধ্য ব্যপার তাই কেউ আবাদ করতে চায় না। তিনি আমাদের কৃষি অফিস থেকে প্রত্যেক বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে থাকেন। কৃষি অফিস থেকে তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করা হয়।’
সারাবাংলা/এমও