Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নড়াইলে নার্সের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের মারামারি, নারী গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২২ ২০:৩৩

নড়াইল: নড়াইল সদর হাসপাতালের নার্সের সঙ্গে রোগীর স্বজনদের মারামারির ঘটনায় এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সকালে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। পরে নার্স বিউটি পারভীন সদর থানায় দুইজনের নামে মামলা করেন।

তারা হলেন-রিমা বেগম এবং তার ছেলে ইমরান শেখ। এর মধ্যে রিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর নড়াইল লোহাগড়া উপজেলার নলদি ইউনিয়নের বারইপাড়া গ্রামের সুমাইয়া বেগম (১৯) চিকিৎসা নিতে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সুমাইয়া বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্বামী ইমরান শেখ নার্সকে ডাকতে যান। কিন্তু নার্স ফ্যান মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে চাননি। তখন ইমরান তাকে রোগীর কাছে আসার অনুরোধ করেন। এ সময় নার্সের সঙ্গে ইমরানের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে নার্স পারভীন তার পায়ের স্যান্ডেল খুলে ইমরানকে মারেন এবং হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আছাদ উজ জামান মুন্সীকে খবর দেন।

খবর পেয়ে ডা. মো. আছাদ উজ জামান মুন্সী, ডাক্তার সুব্রত কুমার বিশ্বাসসহ হাসপাতালের অন্যান্য নার্স, আউট সোর্সিং কর্মী, ওয়ার্ড বয় নিয়ে গাইনি ওয়ার্ডে উপস্থিত হন। এসময় আছাদ উজ জামান মুন্সীর নেতৃত্বে রোগী ও রোগীর স্বজনদের বেধড়ক মারধর করা হয়। করেন। একপর্যায়ে সুমাইয়ার শাশুড়ি রিমা বেগমের কান ছিঁড়ে ফেলে।

মামলার বাদী বিউটি পারভীন বলেন, মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের নারী সার্জারি ওয়ার্ড থেকে ইমরান শেখের স্ত্রী সুমাইয়াকে গাইনি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। এখানে আসার পর আমি ও চিকিৎসক তাকে সেবা দেই। এরপর আমি লেবার রুমের একটি নষ্ট ফ্যান ইলেকট্রিক মিস্ত্রি দিয়ে ঠিক করাচ্ছিলাম। ইমরান শেখ সেখানে গিয়ে আমার সরকারি কাজে বাধা দেয় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মারপিট করেন। এ সময় তার মা রিমা বেগমও আমাকে মারপিট করেন। এ সময় হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আসাদ উজ-জামান মুন্সী ঘটনাস্থলে এলে উপস্থিত হলে রোগীর স্বজনেরা তার ওপরেও হামলা চালায়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রোগী সুমাইয়ার চাচা মহিষখোলা এলাকার কামরুল ইসলাম বলেন, আমার ভাতিজি সুমাইয়া চিকিৎসা নিতে গাইনি ওয়ার্ডে আসেন। তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে ইমরান নার্সকে ডাকতে যান। কিন্তু নার্স ফ্যান মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে চাননি। তখন ইমরান তাকে রোগীর কাছে আসার অনুরোধ করেন। এ সময় নার্সের সঙ্গে ইমরানের কথা কাটাকাটি হয়। তখন হাসপাতালের নার্স ও স্টাফরা মিলে রোগীর স্বজনদেরকে মারপিট করেন। একপর্যায়ে সুমাইয়ার শাশুড়ি রিমা বেগমের কান ছিঁড়ে ফেলে।

সিভিল সার্জন মোছা. নাসিমা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. প্রেমানন্দ মন্ডল এ বিষয়ে বলতে পারবেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. প্রেমানন্দ মন্ডলের কাছে গেলে তিনি রেগে গিয়ে সাংবাদিকদের রুম থেকে বের করে দেন।

রোগীর ও তার স্বজনদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আসাদ উজ-জামান বলেন, রোগী ও তার স্বজনেরা হাসপাতালের নার্স ও ডাক্তারদের ওপর হামলা করেছে।

নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, সদর হাসপাতালের সেবিকা বিউটি পারভিন বাদী হয়ে দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের মধ্যে একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যজনকে আটকের চেষ্টা চলছে।

রোগী ও তার স্বজনদের ওপর হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোগীর পক্ষ থেকে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর