Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিশোরগঞ্জের উছমানপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১২ অক্টোবর ২০২২ ২১:৩৩

ঢাকা: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হোল্ডিং ট্যাক্সসহ ধার্যকৃত অর্থ আদায়ের পর ইউপির রাজস্ব তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দারা জন্মনিবন্ধন করতে গেলে তাদেরকে বলা হচ্ছে, আগে ধার্যকৃত ট্যাক্স পরিশোধ করেন, এরপর জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব ও ওয়ারিশান সনদ প্রদান করা হবে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে গেলে তাদের কাছে ধার্যকৃত অর্থের চেয়ে তিন থেকে চার গুণ বেশি টাকা আদায় করা হচ্ছে।

গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে উছমানপুর ইউপির ৯টি ওয়ার্ডে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ টাকা ধার্য করা হয়। তার মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৩ হাজার ৮২০ টাকা, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৪ হাজার ৫০০ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ৬১ হাজার ৮৯০ টাকা ধার্য কর। কিন্তু প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঁচ গুণ বেশি হিসেবে ৯টি ওয়ার্ডে ১৮ লাখ থেকে ২০ টাকা আদায় করেছেন। ওই টাকার কোন হিসাব রেজিস্ট্রি খাতায় লিপিবদ্ধ করা হয়নি। ফলে টাকাগুলো অর্থ আত্মসাত করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, উছমানপুর ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতাভোগী ২৮৭ জন, বিধবা ভাতাভোগী ১১৭ জনসহ মোট ৪০৪ জন ভাতাভোগীর কাছ থেকে ট্যাক্সের নামে মোট ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। অসহায় বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীদের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করার রশিদ প্রদর্শন করার পরও ভাতার ট্যাক্স হিসেবে জোরপূর্বক অর্থ আদায় করেছেন। পরে ভাতাভোগীদের ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ডেকে এনে ব্যাংক এশিয়া ফিঙ্গার প্রিন্ট নেন। ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান ও তার পিএস নজরুল মোল্লা ভাতাভোগীদের নানা ভয়ভীতি দেখান।

আবার জন্ম নিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশান সনদ এবং নাগরিকত্ব সনদ প্রয়োজন হলে এর জন্য ৪ থেকে ৫ গুণ অর্থ বেশি আদায় করা হচ্ছে। আর তার কার্যালয়ে সব সময় বহিরাগত বেশ কয়েকজন থাকেন। কেউ তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগকারী মো. লিয়াকত আলী গিরানি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগে আরও বলেছেন, হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের কোন রেজিস্টার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নেই। অথচ ইউনিয়নের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে রশিদের বিনিময়ে ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে। সেই রশিদ বইয়ের মুড়িও ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। আবার এলাকার বাসিন্দারা জন্ম নিবন্ধন নিতে গেলে হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ দেখতে চায় চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগীরা প্রত্যেক ওয়ার্ড ভিত্তিক টাকা আদায়ের রেজিস্টার চালুর দাবি করেছেন।

এ ব্যাপারে এলাকার বাসিন্দারা জনস্বার্থে সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতি তদন্ত অনুসন্ধানপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম কারী সারাবাংলাকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনগুলোর আয় বাড়াতে কর নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি ও চকিদারি ট্যাক্স খুবই সামান্য। ট্যাক্স আদায়ের কাগজ দেখে অন্যান্য সেবাগুলো দেওয়া হয়ে থাকে পরিষদ থেকে। এতে কেউ কেউ নাখোশ হয়েছেন। অভিযোগে যা বলা হয়েছে তা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সারাবাংলা/ইউজে/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর