Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: এখনও খাদ্য সহায়তা পাননি সিংহভাগ জেলে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৫৭

ফাইল ছবি

রাজশাহী: মা ইলিশ রক্ষায় ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। চলবে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত। এই ২২ দিন নদীতে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এ সময় কার্ডধারী জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। তবে নিষেধাজ্ঞার সাতদিন পার হয়ে গেলেও এখনো খাদ্য সহায়তা পাননি রাজশাহীর সিংহভাগ জেলে।

জানা গেছে, জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২০ হাজার ৬০০ জন। তবে সহায়তা পাচ্ছেন ৪ হাজার জেলে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা।

খাদ্য সহায়তার তালিকায় নাম না থাকা জেলেরা বলছেন, প্রতিবার মংস্য কর্মকর্তারা তাদের নাম দেয় না। অথচ আমরা সরকারি নির্দেশে মাছ ধরতে নামি না। কিন্তু অন্যরা ঠিকই সহায়তা পাই। আমাদের এ কয়েকদিন মানববেতর জীবনযাপন করা লাগে।

এর আগের বছরগুলোতে নিষেধাজ্ঞা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হতো জেলেদের। এবার নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও জেলেরা খাদ্য সহায়তা পাননি। খাদ্য সহায়তার চাল পেতে তাদের আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে মৎস অধিদফতর।

রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজশাহীর চার উপজেলা ও মহানগর মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৬০০ জন নিবন্ধিত জেলে আছে। জেলে পরিবার আছে আট হাজার। তবে চাল পাচ্ছেন ৪ হাজার জেলে। মূলত পদ্মা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন এই জেলেরা। রাজশাহী মহানগরী ও জেলার গোদাগাড়ী, পবা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে পদ্মা নদী।

রাজশাহীর এই চার হাজার জেলের প্রত্যেককে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে সেই চাল এখনও জেলেরা পায়নি। আগে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হতো এখন তা পাঁচ কেজি চাল বাড়ানো হয়েছে।

রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার জেলে আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রতিবছর অক্টোবরের সময় নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকে। কিন্তু কোনো খাদ্য সহায়তা পাওয়া যায় না। মংস্য কর্মকর্তারা তালিকা তৈরি করে অন্যদের ডেকে চাল দেন। কিন্তু আমাদের মতো অনেক জেলেদের দেন না। এই তিন সপ্তাহ আমাদের খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়।

গোদাগাড়ী উপজেলার শেখেরপাড়া গ্রামের জেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জেলে মানুষ। হঠাৎ করে অন্য কাজ পারি না। কেউ কাজে ডাকেও না। এই সময়টা জাল বুনে পার করি। কিন্তু হাতে তো টাকা আসে না। সরকার থেকে কোনো সহায়তা পাই না। কী কারণে পাই না তাও জানি না।’

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার রাওথা গ্রামের জেলে কুরবান আলী বলেন, ‘সরকার নদীত নাইমতে দিবে না। ভালো কথা, কিন্তু আমরা যে চাইলডা পাই সেইডাও তো এবার পানু না। কবে চাইল দিবে তাও জানি না। এখুন বইসি বইসি কয়দিন খাইতি পারব? এইভাবে তো চলে না।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এবার বরাদ্দ পেতে দেরি হয়েছে। গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় থেকে চাল বরাদ্দের চিঠি পেয়েছি। তারপর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাকে দিয়েছি। তার সঙ্গে দেখা করে দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করার অনুরোধ জানিয়েছি।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহউদ্দীন আল ওয়াদুদ বলেন, ‘আমি গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক স্যারের কাছ থেকে ফাইল অনুমোদন করিয়েছি। গত বুধবার প্রত্যেক উপজেলায় চিঠি পাঠানো হয়ে গেছে। সেখান থেকে চাল বিতরণ করা হবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় খাদ্যগুদাম থেকে চাল তুলে মৎস্য কর্মকর্তারা তা জেলেদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করবেন। দুই-তিন দিনের মধ্যে জেলেরা হাতে চাল পেয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান।

সারাবাংলা/এনইউ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর