Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ডিম বিক্রিতে মনোপলি ব্যবস্থা থাকতে পারবে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৪ অক্টোবর ২০২২ ১৮:২৭

ঢাকা: ডিম বিক্রিতে মনোপলি ব্যবস্থা থাকতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, কারওয়ান বাজারে আসার পর যদি ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এবং এর বাইরে যদি কেউ বিক্রি করতে না পারে- এরকমভাবে জনগণকে জিম্মি করার কোনো প্রচেষ্টা থাকলে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) ‘বিশ্ব ডিম দিবস-২০২২’ উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকালে মানিক মিয়া এভিন্যু সংলগ্ন রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে এ বছরের ডিম দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘প্রতিদিন একটি ডিম, পুষ্টিময় সারাদিন’। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দেশের ৬১টি জেলা, সব ক’টি বিভাগীয় শহর এবং চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার, ডিমের পুষ্টিগুণবিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বিদ্যালয় ও এতিমখানায় ডিম বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি পালন করা হয়।

ডিম দিবসের আয়োজনে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনা আমাদের মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত নয়। যদি কোথাও সিন্ডিকেট থেকে থাকে সেটি দূর করতে আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব। তবে এটাও আমাদের মনে রাখতে, উৎপাদকদের লোকসানে ডিম বিক্রি করতে বলতে পারি না। ঠিক সেভাবেই অতি মুনাফালোভীদের অতিরিক্ত মুনাফা লুটতে দেওয়া হবে না।’

ডিমের দাম সবার জন্য সহনীয় পর্যায়ে কীভাবে রাখা যায়? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জায়গা ভেদে একেক জিনিসের একেক দাম। দেশের সবার ক্রয় ক্ষমতা সমান না। কিন্তু রাষ্ট্র চেষ্টা করছে অ্যানিমাল ও ফিস ফিড সেক্টরে যারা কাজ করছেন তাদের নানাভাবে সহায়তা করতে। আমরা এসব ক্ষেত্রে আমদানিতে উৎসে কর মওকুফ করে দিয়েছি। কিন্তু রাষ্ট্রেরও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। চাইলেই রাষ্ট্র নিজে উৎপাদন ও বিপণন করতে পারে না। আমরা সমন্বয়ের কাজটি করে যাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বাজার ব্যবস্থাপনার কাজ তো আমদের নয়। এর জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ আছে। তারা যদি ডিমের দাম সহনীয় রাখার বিষয়টি নজরদারিতে নেন, তাহলে সবার জন্যই উপকার হয়। ডিম যেহেতু সবার জন্য উপকারী। তাই এর দাম সহনীয় রাখতে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েসনের যেমন সাহায্য লাগবে, তেমনি ভোক্তা অধিকার ও বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইং, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং আমার মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।’

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মশিউর রহমান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ডলার ও ডিজেলের দাম, গমের দাম এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আসা পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে ডিমের দাম উর্ধ্বমুখী। ডিমের দাম কত হবে তা অধিদফতরের বলে দেওয়া উচিত। দাম কমানো সম্ভব। সরকার সহায়তা দিলে ডিমের দাম অবশ্যই কমবে।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘উচ্চমানের প্রোটিন থাকলেও ডিমের ক্যালরি কম। এতে কোনো ট্রান্সফ্যাট নাই। তাই এটি সব বয়সের সবার জন্য উপকারি। ডিম সুপার ফুড। এটি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতেই হবে।’

অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য ডিম গুরুত্বপূর্ণ। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বলব, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে আসুন, আমরা সমাধানের চেষ্টা করব।’

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

উল্লেখ্য, প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন, সর্বোপরি ডিমের গুণাগুন সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিবসটি বিশ্ব জুড়ে একযোগে উদযাপিত হয়ে আসছে।

সারাবাংলা/আরএফ/পিটিএম

বিশ্ব ডিম দিবস শ ম রেজাউল করিম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর