টাঙ্গাইলে সরকারের দেওয়া ঘরে বাস করতে পারছেন না রতন
১৬ অক্টোবর ২০২২ ১৪:০১
টাঙ্গাইল: জেলার ভূঞাপুর পৌরসভায় সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের (খ শ্রেণি) ঘর পেয়েও সেখানে বসবাস করতে পারছেন না স্থানীয় রতন শেখ নামে এক ব্যক্তি। সরকার থেকে পাওয়া সেই ঘরের অর্ধেক জুড়ে প্রতিবেশী জমির মালিক দেওয়াল নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, রতন নাবালক থাকাবস্থায় তার বাবা জুলহাস শেখ মারা যান। তার মা খুকি বেওয়া ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। খুকি বেওয়া টাকা জমিয়ে পশ্চিম ভূঞাপুর মৌজার বিআরএস দাগের দুই শতাংশ জমি কিনে ছেলে রতনের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। সেই জমির ওপর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় রতনকে একটি কাঁচাপাকা ঘর নির্মাণ করে হস্তান্তর করে সরকার।
এরপর ওই জমির উত্তর পাশের প্রতিবেশী বাবু তালুকদার তার ২৪ শতাংশ জমি মেপে দেওয়াল নির্মাণ করেন। প্রতিবেশীর ওই দেওয়ালটি রতনের ঘরের অর্ধেক দখল হয়ে যায়। এতে সরকারের দেওয়া ওই ঘরে বসবাস করা রতন ও তার মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোন সুরাহা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবেশী একটি ধনী পরিবারের কারণে একটি ভিক্ষুক পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েও বসবাস করতে পারছে না। এটা অত্যন্ত লজ্জার বিষয়, মাতাব্বরদের নিয়ে এলাকায় সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।
ভুক্তভোগি রতন শেখ বলেন, ‘আমার মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে টাকা জমিয়ে জমিটুকু কিনেছিলেন। সরকার আমাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দিলেও আমরা ব্যবহার করতে পারছি না। পৌরসভাসহ স্থানীয় মাতাব্বরদের কাছে বারবার ঘুরেও কোনো সুরাহা পাইনি।’
জমির চারপাশে দেওয়াল নির্মাণকারী প্রতিবেশি বাবু তালুকদার জানান, রতনের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে দেওয়াল নির্মাণ করেননি তিনি। জমি মাপের পর সীমানা রতনের ঘরের অর্ধাংশ পর্যন্ত গেছে। মাপে যদি রতন জায়গা পান তাহলে অবশ্যই তিনি নিজ খরচে দেওয়াল ভেঙে সরিয়ে নেবেন।
ভূঞাপুর পৌরসভার কাউন্সিলর মো. শাহিনুজ্জামান শাহীন জানান, রতনের ঘরের অর্ধাংশ জুড়ে প্রতিবেশীর দেওয়াল নির্মাণের বিষয়ে কয়েকবার ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে। জমির মাপগত ত্রুটির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভার সার্ভেয়ারের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। ভুক্তভোগী যদি প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন তাহলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
সারাবাংলা/ইআ