৫৭ জেলা পরিষদে ভোট সোমবার, ২৬ চেয়ারম্যান বিনা ভোটে জয়ী
১৬ অক্টোবর ২০২২ ১৭:০৭
ঢাকা : আগামীকাল ১৭ অক্টোবর সারাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা বাদে ৬১ জেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হচ্ছে ৫৭ জেলায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচন আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে ভোলা ও ফেনী জেলার সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এই দুই জেলায় কোন নির্বাচন হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৬ জন চেয়ারম্যান, ১৮ জন মহিলা সদস্য এবং ৬৫ জন সাধারণ সদস্যসহ মোট ১০৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের কাজ নির্বাচন করা। তাই দলীয়ভাবে হচ্ছে না কি সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়। একজন দাঁড়াচ্ছে, আরেকজন দাঁড়াচ্ছেন না। কাজেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়াটা বেআইনি নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কেউ অংশ নিতে পারবে না, এমন অবস্থার তৈরি হয়েছে, তা তো নয়। আমরা চাচ্ছি সবাই নির্বাচনে আসুক। কিন্তু কেউ যদি না আসে, কেমন করে তাদের আমরা আনবো।’
অন্যদিকে ইসির যুগ্মসচিব এসএম আসাদুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পৃন্ন করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৯ টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে এবং একটানা দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। প্রতি উপজেলা সদরে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে ইভিএম এ ভোটগ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ মনিটরিং করার জন্য প্রতি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। সিসিটিভি ও ইভিএম মেশিন যথাযথভাবে সচল রাখার স্বার্থে এবং ভোটারগণ যাতে সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য ভোটকেন্দ্র সংশ্লিষ্ট উপজেলা সদরে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫৭টি জেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৯২ জন, সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮৫ জন ও সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ৬০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৬০ হাজার ৮৬৬ জন। এই নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডের ৪৪৮টি, সংরক্ষিত ওয়ান্ড ১৬৬টি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৬২টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯২৫টি।
এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ জন সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও র্যাবের একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও বৃহত্তর ১৯টি জেলায় দুই প্লাটুন ও অন্যান্য জেলায় এক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন৷
এদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটকক্ষে ভোটাররা যাতে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে না পারেন, অথবা ভোটকক্ষে ভোটদান বিশেষ করে গোপন কক্ষে ভোট প্রদানের ছবি তুলতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২৩ আগস্ট, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিষদ বাদে ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ইসির তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয় ১৮ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হয় ২৬ সেপ্টেম্বর। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। জেলা প্রশাসক নিজ জেলায় নির্বাচনী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার।
সারাবাংলা/জিএস/এনইউ