ধরন পাল্টে ভয়ংকর হচ্ছে ডেঙ্গু, বাড়ছে নারী-শিশু মৃত্যু
১৬ অক্টোবর ২০২২ ২২:২৬
ঢাকা: দেশে ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। সেইসঙ্গে বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাসের চারটি ধরন দেখা যায়। এর মাঝে দেশে প্রথমবারের মতো পাওয়া যাচ্ছে চতুর্থ ধরন হিসেবে পরিচিত ডেন-৪। ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশে ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ধরনের উপস্থিতি দেখা গেলেও চলতি মৌসুমে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলাতেও পাওয়া গেছে ডেন-৪ এর উপস্থিতি। নতুনভাবে পাওয়া এই ধরনের কারণে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে বলেও ধারণা তাদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, এবার আক্রান্তদের অবস্থা দ্রুতই খারাপ হচ্ছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যারা সুস্থ হয়েছেন তারাও দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ দফায় আক্রান্ত হলে সতর্ক থাকতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, চলতি মৌসুমে হাসপাতালে ভর্তির প্রথম তিন দিনের মাঝেই মৃত্যুবরণ করছে রোগীরা। এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শিশু ও নারীদের মৃত্যু বাড়ছে। তবে বেশি মাত্রায় আক্রান্ত হচ্ছে ২০ বছরের বেশি বয়সীরা। চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পুরুষের তুলনা নারীর মৃত্যুসংখ্যা বেশি বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ধরন পাল্টে ভয়ংকর রূপে ডেঙ্গু
দেশে সাধারণত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এডিস মশা বাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তবে এবার অক্টোবর মাসে দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হার।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার যেসব রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন তাদের অধিকাংশই ডেন-থ্রি সেরোটাইপে আক্রান্ত। কোথাও কোথাও ডেন-ফোরের উপস্থিতিও পাওয়া যাচ্ছে। যারা আগে এক বা একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তারা ডেন-থ্রি এবং ডেন-ফোরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই পরিস্থিতি জটিল রূপ নেওয়ায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে। এমনকি যারা মারা যাচ্ছেন এবার তাদের বেশিরভাগও ডেন-থ্রি ও ডেন-ফোরে আক্রান্ত।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু সেরে যায়। তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এবারের ডেঙ্গু রোগীদের বেশিরভাগ ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে পরিণত হচ্ছে। ফলে দেখা যায়, আক্রান্তের পাঁচদিন পর রোগী যখন মনে করে সে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে তখনই তাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। জ্বর যখনই কমে আসছে, রোগীর রক্তচাপও কমে যাচ্ছে। সে সময়ে ভালো চিকিৎসা প্রয়োজন হয়।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার কক্সবাজারে ডেঙ্গুর স্ট্রেইন ৩, ৪ ও ১-এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সারাদেশেই কিন্তু মানুষের যোগাযোগ এখন বাড়ছে নানা কারণে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে উন্নয়নমূলক কাজও চলছে। ফলে ডেঙ্গুর সবধরন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। যদি কয়েকটি সেল টাইপ একসঙ্গে থাকে, তাহলে আক্রান্তের আশঙ্কা বেশি থাকে; সিভিয়ার ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে আইইডিসিআর ডেঙ্গুর সেল পর্যবেক্ষণ করছে। এ পর্যন্ত ভাইরাসের চারটি ধরন পাওয়া গেছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমাদের সার্কুলেশনে স্ট্রেইন-১ ও ২ ছিল। ২০২১ সালে স্ট্রেইন ৩-এর প্রকোপ দেখা দেয়। কিন্তু ২০২২ সালে স্ট্রেইন ৪-এর উপস্থিতি মিলেছে। এবার ঢাকায় ডেন-ফোরের উপস্থিত পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কক্সবাজারে ডেন-ওয়ান, ডেন-থ্রি ও ডেন-ফোর সেরোটাইপ ডেঙ্গু হচ্ছে। একাধিক সেরোটাইপে সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি হচ্ছে।’
ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. একরামুল হক বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো আমরা ডেন-৪ ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পেয়েছি, যা অবশ্যই উদ্বেগজনক। অন্যান্য বছর অক্টোবর থেকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু করলেও এবার তেমনটা হচ্ছে না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অসময়ে বৃষ্টিপাত ও যেখানে-সেখানে পানি জমে থাকার কারণে মশার বংশবৃদ্ধির সুযোগ ঘটছে। এর ওপর ধরন পাল্টানোতেও ভয়াবহতা বাড়ছে। সবমিলিয়ে আমাদের আসলে রিল্যাক্স মুডে থাকার কোনো উপায় নেই। এডিস মশার বিস্তার রোধে আমাদের অবশ্যই কাজ করে যেতে হবে।’
নতুন ধরনের বৈশিষ্ট্য কী?
চিকিৎসকরা বলছেন, এবার হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের মাঝে শক সিনড্রোম দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হল শরীরের ভেতরে রক্তক্ষরণ হওয়া। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রোগীরা দেরিতে শনাক্ত হচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেরি করে আসছে। এই শক সিনড্রোমে আক্রান্তদের অনেক সময় চোখের সাদা অংশে রক্ত জমাট হতে দেখা যায়। অনেক রোগীর মধ্যে শ্বাসকষ্ট, পেট ব্যথা, বমি, মল বা প্রস্রাবের সাথে এমনকি নাক মুখ থেকে রক্ত যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা যেতে পারে। এই উপসর্গগুলোর কোনো একটি দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন।
রাজধানীতে ডেঙ্গুর হটস্পট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ডেঙ্গুর হটস্পট রয়েছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এডিশ মশা রয়েছে মুগদা এলাকায়। দ্বিতীয় মিরপুর ও তৃতীয় অবস্থানে উত্তরা। এছাড়া যাত্রাবাড়ী, জুরাইন, পোস্তগোলা, ধানমণ্ডি, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব বেশি। এসব এলাকায় অনেক বেশি পরিমাণে ডেঙ্গু রোগী রয়েছে।’
সংক্রমণ পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?
কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার বলেন, ‘হটস্পট ব্যবস্থায় ব্যর্থ হওয়ার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ডেঙ্গু রোগী যেসব এলাকা থেকে বেশি আসে, সেখানে কার্যকরী ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। দরকার হলে সেখানে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে উড়ন্ত মশাগুলোকে মেরে ফেলতে হবে। তা হলে এক রোগী থেকে অন্য রোগী আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে স্থানীয় প্রশাসনকে। যদি এমনটা না হয় তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না।’
তিনি বলেন, ‘চলতি বছর কিন্তু অনেক আগে থেকেই সতর্ক করা হচ্ছিল। কিন্তু বার বার সতর্ক করার পরও দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো গতানুগতিক কাজ করছে। এখন যে পরিস্থিতি দেখছি, তাতে অবস্থার উন্নতি হতে আরও সময় লাগবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার সব জায়গায় ডেঙ্গু রোগীর হার সমান নয়। যেসব এলাকায় ডেঙ্গু রোগী বেশি, সেখানে মশক নিধনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। মাইকিং, জনসচেতনতা, ওষুধ ছিটানো— সবকিছু একসঙ্গে করতে হবে। এমনটা না করতে পারায় এখন পর্যন্ত জ্যামিতিক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু।’
অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘আমরা একটা জরিপ করে দেখেছি যে, এদেশের মানুষ এডিস মশা কীভাবে হয়, প্রজননস্থল, বদ্ধ, স্বচ্ছ পানি- এই সবকিছুই জানে। তারপরও তারা সচেতন হন না। এটা একটা মানসিকতা। এর পরিবর্তন দরকার। আর সিটি করপোরেশন যতই বলুক তারা মশার উৎস ধ্বংস করছে। কিন্তু উড়ন্ত এডিন মশা থেকে যাচ্ছে।’
যা বলছে কর্তৃপক্ষ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডিএনসিসি এলাকায় হাসপাতালের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যাও বেশি। তবে আমরা সংখ্যাগত দিক নিয়ে না ভেবে সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করেছি। মশক নিধনে আমাদের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। উত্তরা, মিরপুর ও দক্ষিণখানের মতো ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোতে আমরা কাজ করছি। সচেতনতা বৃদ্ধিসহ যে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, নেওয়া হচ্ছে।’
ডিএসসিসি এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যকে সঠিক নয় বলে অভিযোগ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে রাজধানীতে যে রোগী আছে তার ১০ শতাংশ ডিএসসিসি এলাকায়। তবে এখানে বাড়তি রোগী দেখানো হচ্ছে। এর বেশির ভাগ গ্রাম থেকে শহরে এসে আত্মীয়ের বাসায় থেকে আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। সে কারণে বেশি দেখানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি তা সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গুতে বর্তমানে নারী ও শিশুরা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে সব সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু মশা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা স্বাস্থ্য অধিদফতরের নেই। এক্ষেত্রে সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ঘরের ভেতরে ও বাইরের পরিবেশ। ফুলের টব, বালতি বা ঘরের কোনো স্থানে পানি যেন না জমে থামে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জ্বর হলে সবাইকে অন্তত ডেঙ্গু রোগ শনাক্তে জরুরি এনএস১ পরীক্ষা করাতে হবে। দ্রুত নমুনা পরীক্ষা করানোর পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।’
২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৫৫ ডেঙ্গু রোগী, মৃত্যু আরও ৫
শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে রোববার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৮৫৫ জন। চলতি বছরে ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হওয়ার পরিসংখ্যান এটি। চলতি মৌসুমে এক দিনে এত বেশি ডেঙ্গু রোগী এর আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। এর আগে, গত ১৩ অক্টোবর দেশে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৬৫ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার তথ্য জানানো হয়। এ নিয়ে সারাদেশে মোট দুই হাজার ৮৪৭ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
রোববার (১৬ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচ জন মারা গেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। এ নিয়ে দেশে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম