হুম্মামের হুঙ্কার: ‘গুডস হিল’ ঘেরাওয়ের ঘোষণা
১৮ অক্টোবর ২০২২ ২০:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া যুদ্ধাপরাধীদের ‘শহিদ’ সম্বোধন করায় বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। অন্যথায় চট্টগ্রাম শহরে তাদের বাড়ি ‘গুডস হিল’ ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন তারা, যে বাড়িটি একাত্তর সালে ‘টর্চার ক্যাম্প’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের মহানগর ও জেলা কমিটি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দেন যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছেলে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী। বক্তব্যে তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়ি ফিরতে পারবেন না। সকল শহিদদের কবরে গিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হবে।’ তিনি ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন, যে স্লোগান বিএনপি দলীয়ভাবে ব্যবহার করে না।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড হুম্মাম কাদেরের এই বক্তব্য ও স্লোগানকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা উল্লেখ করে তার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে হুম্মামের বক্তব্যের জন্য সাতদিনের মধ্যে বিএনপিকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের শহিদ বলা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অপমান। হুম্মাম চৌধুরী এই ধৃষ্ঠতা কোত্থেকে পেয়েছে? একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ১৯৭২ সালে যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর বিচার হলে হুম্মাম চৌধুরীর জন্ম হতো না। তার বক্তব্য-স্লোগান রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা উচিত। বিএনপিকে বলছি- সাতদিনের মধ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে যুদ্ধকালীন নির্যাতন কেন্দ্র গুডস হিল ঘেরাও করা হবে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শামীমা হারুন লুবনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ক্ষতবিক্ষত করার জন্য রাজাকার সাকা চৌধুরীর ছেলে হুঙ্কার দিয়েছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের সন্তানদের ঠাঁই হবে না। হুম্মামের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারের সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, নগরের আহ্বায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু’র সভাপতিত্বে এবং জেলার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুল আবছার, নগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল, সরফরাজ আহমেদ চৌধুরী রাজু, চসিক কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজি, সংগঠনের নগর শাখার সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজিশ ইমরান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম