‘মানবতাবিরোধী’ জিয়া-এরশাদ, খালেদা-তারেকের বিচার চান নাছির
১৮ অক্টোবর ২০২২ ২৩:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, শেখ রাসেলের মতো একটি অবুঝ, নিষ্পাপ শিশুকে খুন করা ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস ঘটনা। বর্বর ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর রক্তকে ভয় পায় বলেই অবুঝ শিশু রাসেলকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্য, এমনকি অবুঝ শিশু রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে বর্বরতা ঘাতকরা দেখিয়েছিল, সেটা আমরা মানুষের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারিনি। এ জন্য হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি যারা, তারা মাঠে রাজনীতি করতে পারছে। যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত এখনো কীভাবে রাজনীতি করে? জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া তাদের এই সুযোগ দিয়েছে। এদের প্রত্যেককে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনের আলোচনা সভায় আ জ ম নাছির এসব কথা বলেন।
নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই সভায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন- সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ শমসের, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী।
এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত এক সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ছোট সন্তান শেখ রাসেল সেদিন ঘাতকদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছিল। কিন্তু ঘাতকদের মন গলেনি। সেদিন মানবিক, নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক সনদ, আইসিও, জাতিসংঘের শিশু সনদ সব কিছুকেই কলঙ্কিত করা হয়েছিল। রাসেলের রক্তের ঋণ শোধের জন্য আমাদের শিশুদের জন্য নিরাপদ দেশ গড়ে তুলতে হবে।’
মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনার সভার পর শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘মেয়র মেধাবৃত্তি’ দেয়া হয়।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমদ, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, নাজমুল হক ডিউক, মোহাম্মদ ইসমাইল, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, আবদুল মান্নান, নুরুল আমিন, জেসমিন পারভীন জেসী, শাহীন আক্তার রোজী, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার।
এর আগে সকালে চসিক চত্বরে শেখ রাসেলেরর অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে সিটি মেয়র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। সকালে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহম্মদ ও একেএম সরোয়ার কামাল দুলু।
বিকেলে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। সার্কিট হাউজে শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
শেখ রাসেল দিবস উপক্ষে বন্দর ভবন প্রাঙ্গণে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান। এরপর বন্দরের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা, রচনা, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। এরপর আনন্দ শোভাযাত্রা ও বৃক্ষরোপণ করা হয়। এছাড়া চিত্রাংকন, সৃজনশীল রচনা ও স্বরচিত কবিতা লিখন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বেলা সাড়ে ১২টায় কলেজ অডিটোরিয়ামে ‘শেখ রাসেল নির্মলতার প্রতীক, দূরন্ত প্রাণবন্ত নির্ভীক’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন- কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইলিয়াছ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবীর দাশ, বাংলা বিভাগের প্রভাষক ফারজানা আক্তার এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অনুপ কুমার বড়ুয়া। সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম