কক্সবাজারের ডিসিকে সতর্ক করলেন হাইকোর্ট
১৯ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৪৭
ঢাকা: সমুদ্র সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ প্রতিপালন না করা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মামুনুর রশীদ নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এ সময় আদালত ডিসি মামুনুর রশিদকে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করেন।
একইসঙ্গে এ বিষয়ে আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সৈকতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ৯ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে ডিসি মানুনুরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী বুধবার ব্যাখ্যা দিতে সশরীরে হাইকোর্টে হাজির হন ডিসি মামুনুর রশীদ।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে ডিসির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
শুনানির শুরুতে কক্সবাজারের ডিসির পক্ষে আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘আমরা কখনো ঢালাওভাবে কারও বিরুদ্ধে কনটেম্পট করি না। তাকে (ভিসি) অনেকবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাকে আদালতের মনোভাব জানিয়েছেন। এরপরও তিনি সব্বোর্চ আদালতের আদেশ মানেননি। এ কারণে তাকে স্বশরীরে তলব করেছি।’
এরপর ডিসির উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘কক্সবাজারকে সারাবিশ্বের মানুষ চেনে। আপনি সেই কক্সবাজারের ডিসি। কক্সবাজারের সৌন্দর্য রক্ষায় ভূমিকা রাখুন। আপনাকে সারাবিশ্বের মানুষ চিনবে।’
আদালত আরও বলেন, ‘উচ্ছেদ করে আমরা তাদের বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে বলছি না। আপনি সুন্দর ব্যবস্থাপনা করুন। মানুষ আপনাকে মনে রাখবে। আমরা প্রতিদিন পত্রিকা-টিভি খুলে দেখি আপনি কী করছেন। কিন্তু আপনার পারফরমেন্স জিরো তো নয়ই নেগেটিভও।’
এ সময় কক্সবাজারের ডিসি আদালতকে বলেন, ‘আমি কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। এখন আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করব। তখন আদালত বলেন, শুধু করব বললে হবে না। আপনাকে করতেই হবে।’
তখন ডিসি মামনুর রশিদ বলেন, ‘আমি আদালতের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। পরে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন। একইসঙ্গে ৯ নভেম্বরের মধ্যে তাকে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন।’
এর আগে, সকালে সমুদ্র সৈকত এলাকার অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা না মানার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে হাইকোর্টে হাজির হন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। আদালতের আদেশ না মানায় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
গত ২৫ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি কক্সবাজারের ডিসিকে তলব করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে