Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্দা চলমান ও ঘনীভূত হচ্ছে: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২০ অক্টোবর ২০২২ ১১:৫২

ঢাকা: বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী মন্দার বিষয়টি চলমান ও তা আরও ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ইতিহাসের চূড়ান্ত চূড়ায় এবং তা লাগামহীন।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংগঠনটির পক্ষে এসব কথা বলা হয়।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস দেখা গেছে। সারাবিশ্ব জুড়েই মূল্যস্ফীতি ঐতিহাসিকভাবেই ঊর্ধ্বগতিতে রয়েছে। বিভিন্ন দেশে প্রবৃদ্ধি হয় নিচে, অথবা নেতিবাচক দিকে রয়েছে। আমরাও সেই প্রভাব অনুভব করছি। এই সংকটটি চললাম ও ঘনীভূত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতি লাগামগীন। আন্তর্জাতিক পণ্যের দামও বেশি। আবার দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও বেশি। খাদ্য সংকটেরও আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ‘এফএও’ পৃথিবীর ৪৫টি দেশ খাদ্য সংকটের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে, এই তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে।”

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা যেসব পণ্য আমদানি করি, তার খরচ বেড়ে গেছে। সামনেও এটি কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রেমিটেন্সেও প্রবৃদ্ধি নেই। কর্মী বেশি পাঠালেও আয় তেমন হারে আসছে না। আবার হুন্ডি খুব সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারা ভালো অফার (রেট) করছে। বৈদেশিক মুদ্রা দেশের ভেতরে কমে যাচ্ছে আবার বিদেশ থেকে আসার প্রবণতাও কমে গেছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহও নেতিবাচক।’

রিজার্ভ কমে যাওয়া ছাড়াও মুদ্রার বিনিময় হারও প্রভাব ফেলছে জানিয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘এই বাজারই কিন্তু নির্ধারণ করবে ডলারের রেট কত হবে। এখন তো বাজারে ডলার নেই। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফএর ঋণের অর্থ রিজার্ভে যুক্ত হলে বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। তখন মুদ্রার বিনিময় হার এভাবে নির্ধারণ করা উচিত হবে না।’

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের বাজার আমদানি নির্ভর। দেশে জ্বালানি তেলের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বা ডলার সংকট রয়েছে। জ্বালানি তেল আমদানি ক্রমে ক্রমান্বয়ে কমে আসছে। তারা বলছে অর্থ নেই। অর্থের প্রাপ্যতা কম। এলএনজি আমদানিও কমানো হয়েছে। টাকার অভাব যেমন রয়েছে সংকট রয়েছে সরবরাহেরও। কিন্তু জ্বালানি তেলের মূল্য পুর্নর্বিবেচনা করা উচিত। কারণ দেশে মূল্যস্ফীতি বেশি রয়েছে। জনগণ যাতে পরিত্রাণ পায় সেটি বিবেচনা করা উচিত।’

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, ‘দেশে এখন বহুমুখী সংকট রয়েছে। বহুমুখী নীতিমালা প্রয়োজন। সব মন্ত্রণালয় এটার সঙ্গে জড়িত। সবার সমন্বয়ে একটি কমিটি থাকা প্রয়োজন। বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকেও এই কমিটির সঙ্গে জড়িত করা উচিত।’

মন্দার বিষয়টি মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি খাত ও বহির্খাত তিনটি দিক থেকে বিবেচনা করছে সিপিডি।

এদিকে, বেসরকারি খাতে মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বেতন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে সিপিডি বলেছে, ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিও যথেষ্ট নয়। ওএমএস কার্যক্রম আরও বাড়ানোর কথা বলছে প্রতিষ্ঠানটি। দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জ্বালানির দাম কমানো, অর্থের জন্যে কর জিডিপি বাড়ানোসহ আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিফ্রিংয়ে উপস্থিত রয়েছেন- সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খানসহ অনেকে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও

মন্দা সিপিডি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর