Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পারেননি জনসন, ব্যর্থ ট্রাস, ঋষি’ই কি বিট্রেনের ভবিষ্যৎ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২১ অক্টোবর ২০২২ ১২:০৭

২০১৬ সালে ডেভিড ক্যামেরন যখন ব্রেক্সিট গণভোটের পর পদত্যাগ করেন তখনই মূলত উত্থান হয়েছিল বরিস জনসনের। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ব্রিটেনে যে গণভোট হয়েছিল, সেখানে তিনিই ছিলেন ব্রেক্সিটপন্থীদের প্রধান নেতা। ২০১৯ সালের নির্বাচনে জিতে বরিস বুঝিয়ে দেন তিনিই একমাত্র! কিন্তু মহামারির ধাক্কায় সব টালমাটাল হয়ে পড়ে। আর প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় বরিসকে। কিন্তু এর পেছনে ‘কলকাঠি’ নাড়ের এক ভারতীয়। নাম তার ঋষি সুনাক।

বিজ্ঞাপন

ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ঋষি সুনাক ছিলেন বরিস জনসন সরকারের অর্থমন্ত্রী। মূলত তিনি বরিস জনসনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। কে জানতো অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগের ভারেই নড়ে উঠবে পুরো ডাউনিং স্ট্রিট। কিন্তু হলো তাই। একপ্রকার বাধ্য হয়েই পদত্যাগ করতে হয় বরিস জনসনকে। তখনই সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঋষি সুনাকের নাম শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা তাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেন লিজ ট্রাস’কে।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এবার কে হবেন বিট্রেনের প্রধানমন্ত্রী?

গতকাল লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে পদত্যাগের কথা জানান লিজ ট্রাস। বিবৃতিতে তিনি বলেন, যে ম্যানডেটের ভিত্তিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেই ম্যানডেট তিনি পূরণ করতে অপারগ। তাই তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসকে তার পদত্যাগের কথা জানিয়েছেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে কনসারভেটিভ পার্টি তার উত্তরসূরীকে বেছে না নেওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাবেন।

দায়িত্ব নেওয়ার ৪৫ দিনের মাথায় লিজ ট্রাসের পদত্যাগ

সাধারণত কনজারভেটিভ পার্টির ভেতরে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়া কয়েক মাস ধরে চলে। প্রথম এমপিরা কয়েকজন প্রার্থীকে নির্বাচন করেন এবং তাদের মধ্যে যিনি পার্টি সদস্যদের ভোট সবচেয়ে বেশি পান তিনিই প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু এবার বিষয়টি এত ধীরগতিতে চলবে না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই হয়তো এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করতে হবে।

আর এই দৌড়ের মধ্যেই ফের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বরিস জনসন এবং ঋষি সুনাক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর লড়াইয়ে সম্ভাব্য অনেক মুখের মধ্যে প্রথম নাম প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আর দ্বিতীয় নাম ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের।

এর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিব বেন ওয়ালেস, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সচিব কেমি ব্যাডেনোচ, সেক্রেটারি অফ স্টেট জেমস ক্লিভারলি এবং সম্প্রতি পদত্যাগ করা সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান রয়েছেন। এই তালিকায় নাম ছিল অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্টেরও। কিন্তু লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পর তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে অংশ নেবেন না।

ফলে বাজির দরে এবার সবার আগে রয়েছেন ৪২ বছর বয়সী ঋষি। প্রথম থেকেই প্রধানমন্ত্রিত্বের লড়াইতে এগিয়ে ছিলেন অন্যদের থেকে। তাই দলের সদস্যরা চাইছেন, ঋষিকে প্রধানমন্ত্রী ও মরডন্টকে উপপ্রধানমন্ত্রী করা হলে অর্থনীতির পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। আবার কেউ কেউ চাইছেন, সুনাককে অর্থমন্ত্রী করা হোক আর মরডন্টকে দেওয়া হোক দলের দায়িত্ব।

জনমত জরিপেও বলা হচ্ছে, সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় এক নম্বরে আছেন ঋষি সুনাক। যে ঋষি’র পদত্যাগে টালামাটাল বিট্রেনের পার্লামেন্ট, সেই ঋষি কী পারবেন পরিস্থিতি বদলাতে? তবে দলের অনেক সদস্য এখনও বিশ্বাস করেন যে, তিনিই বরিস জনসনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। ফলে এখন পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেই দিকেই সবার নজরই।

সারাবাংলা/এমও

ঋষি সুনাক জনসন ট্রাস ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর