ইস্যু নিয়ে আলোচনায় ডাকলে সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বাম জোট
২২ অক্টোবর ২০২২ ২১:১৪
ঢাকা: চরম বাম ধারার ৯টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক বামজোট আন্দোলনের পাশাপাশি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করতে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে ইস্যুভিত্তিক আলোচনার জন্য ডাকলে বামগণতান্ত্রিক জোট পরিস্থিতি বুঝে সেই আলোচনায় অংশ নেবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, অবাধ নিরক্ষেপ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিসহ সরকারের পদত্যাগের দাবি নিয়ে জোটটি আন্দোলনে রয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ এবং ডিসেম্বরের মধ্যে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত লংমার্চ করার সিন্ধান্ত নিয়েছে বাম জোট।
বাম জোট বলছে— এই কর্মসূচি ব্যতিক্রম হবে। টেকনাফ থেকে বাম জোটের নেতা-কর্মীদের একটি গ্রুপ ঢাকা হয়ে তেঁতুলিয়া যাবে। অপর একটি গ্রুপ তেুঁতুলিয়া থেকে ঢাকা হয়ে টেকনাফে যাবে। তাদের এই কর্মসূচিতে বাম জোটের সকল বন্ধুপ্রতিম সংগঠনগুলোসহ জনগণকে সম্পৃক্ত করবে। এরপর ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সেটি আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে। ওই মহাসমাবেশ থেকে তাদের দাবি আদায়ের জন্য নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের দায়িত্বশীল সূত্র থেকে জানা গেছে, সরকার পতনের দাবিতে তারা অনড়। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে জোটটি। এই জোটের টার্গেট ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়া।
গত নির্বাচনে বামগণতান্ত্রিক জোট মোট ১৫০টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। এরমধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৮০ জন প্রার্থী দেয়। নির্বাচনে তাদের কোনো প্রার্থী জয়লাভ করেনি।
এ বিষয় বামজোটের নেতৃবৃন্দ মনে করেন সুষ্ঠু অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বেশ কয়টি আসনের প্রার্থী জয়লাভ করত। নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি বলে তাদের কোনো আসনে প্রার্থী জয়লাভ করেনি। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জোটটি বেশকয়েকটি আসন পাবে বলে ধারণা করছে।
এ সব বিষয় নিয়ে বামগনতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা করার দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট রাজপথে রয়েছে। বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার পর ঢাকায় একটি মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই মহাসমাবেশটি আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
নির্বাচনের ইস্যু নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের ডাকলে তাতে সাড়া দিবেন কিনা? সারাবাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সরকার কোনো ইস্যু নিয়ে ডাকবে তার ওপর নির্ভর করে জোটের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।’
বাসদের সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সাবেক সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা কেমন হবে সে বিষয় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ডাকলে আমরা সেখানে যাব। এ ছাড়া সরকার পতনের আন্দোলন তো রয়েছেই। এর বাইরে সরকারের সঙ্গে বৈঠক করার কোনো ইচ্ছা বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি পেশ করেছি। ওই দাবি বাস্তবয়নের জন্য রাজপথ রয়েছে। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে জেলা ও বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করে ঢাকায় একটি বড় সমাবেশ করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এ থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে যুগপৎ আন্দোলন হবে। এই যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়টি রাজপথ থেকেই শুরু হবে।’
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে