ধুমধামে বিয়ে হলো ‘ঠিকানাবিহীন’ বিপাশার
২৭ এপ্রিল ২০১৮ ২২:০৮
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
সিলেট: দশ বছর আগে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উদ্ধার করা হয়েছিল বিপাশা আক্তার মুন্নিকে। এরপর থেকে তার আবাস ছিল সিলেটে সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত শিশু পরিবারে (সেফ হোম)। সেখানেই বেড়ে ওঠা তার। বর আব্দুল লতিফের সঙ্গে সংসার পাতলেন তিনি। পুরিপূর্ণতায় যেনো ভরে উঠে তাদের নতুন জীবন এমনটাই কামনা করলেন বিয়েতে আগত শ’ তিনেক অতিথি।
শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সিলেট নগরীর রায়নগরস্থ শিশু পরিবারে আয়োজন করা হয় মুন্নির বিয়ের। তার বর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার বুড়াখালি রাজনগর গ্রামের মৃত আব্দুল আহাদের ছেলে আব্দুল লতিফ (২৭)। এ দিন বেলা ১১টায় বরযাত্রী নিয়ে শিশু পরিবারে আসেন আব্দুল লতিফ।
বিয়েতে সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান, সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেটের পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের স্ত্রী আসমা কামরান, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদম মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিমসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামান বিপাশার নতুন জীবনে সবার কাছে দোয়া কামনা করে বলেন- ‘বিপাশার বিয়ের আয়োজন করতে প্রশাসন খুশি। এই আয়োজনে সবার সহযোগিতা ছিল। আর সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বিয়েতে উপস্থিত হয়ে জানালেন- ‘এমন আয়োজন সমাজের জন্য অনুপ্রেরণা।’
শিশু পরিবার সূত্রে জানা যায়, পিতা-মাতৃহীন বিপাশা আক্তার মুন্নিকে ২০১১ সালে ‘ঠিকানাবিহীন’ অবস্থায় খুঁজে পেয়েছিলো সুনামগঞ্জের দিরাই থানা পুলিশ। ওই সময় বিপাশার বয়স ছিল এগারো বছর। পুলিশের কাছে বিপাশা তার পিতা-মাতার পরিচয় কিংবা বাড়িঘরের ঠিকানা জানাতে পারেনি। এ কারণে আদালতের নির্দেশে বিপাশাকে প্রথমে সেইফহোম এবং পরবর্তীতে সিলেটের রায়নগরস্থ সরকারি শিশু পরিবারে (বালিকা) পাঠানো হয়। ২০১৫ সাল থেকে বিপাশা ওই পরিবারে রয়েছে। এরই মধ্যে অনেক খোঁজা হলো বিপাশার পিতা-মাতাকে। কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে- শেষ বিকেলে চিরচেনা ক্যাম্পাস ছেড়ে স্বামীর সঙ্গে নতুন জীবনের পথে পা বাড়ান বিপাশা। যাওয়ার সময় দীর্ঘ দিনের সহকর্মী শিশু পরিবারের শতাধিক শিশুর চোখ ছিল জলে ভরা। কাঁদলেন বিপাশাও। সবার উপস্থিতিতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনে বিপাশা আক্তার মুন্নিকে নিয়ে সুনামগঞ্জে ফিরে যান বর আব্দুল লতিফ।
সারাবাংলা/এমএইচ
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook