বিপদ সংকেত: চট্টগ্রাম বন্দরে সব কার্যক্রম বন্ধ
২৪ অক্টোবর ২০২২ ১৩:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: উপকূলের দিকে ক্রমশঃ অগ্রসর হওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দরে ‘অ্যালার্ট-থ্রি’ অর্থাৎ বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। বন্দরে সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জেটিতে অবস্থানরত সব জাহাজকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেটি সংলগ্ন বন্দরের ইয়ার্ড থেকে সীমিত আকারে কিছু পণ্য খালাস হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত শুরুর আগেই সব পরিবহনকে জেটি ও ইয়ার্ড ছাড়তে বলা হয়েছে। জেটিতে পণ্য খালাসে নিয়োজিত সরঞ্জামগুলোর ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত জাহাজগুলোকেও গভীর সমুদ্রে চলে যাবার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এর ফলে বহিঃনোঙ্গরে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় শতাধিক জাহাজ গভীর সমুদ্রে চলে যাওয়ায় বন্দর সীমানা এখন জাহাজশূন্য বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সম্ভাব্য আঘাত মোকাবেলায় জরুরি সভায় বসেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা। সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। তবে এটি আরও ঘণীভূত হয়ে অগ্রসর হতে থাকায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ছয় নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বন্দরের সচিব ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিগন্যাল-সিক্স জারির পর বন্দরেও আমরা অ্যালার্ট-থ্রি জারি করেছি। সাধারণত সংকেত ছয় কিংবা এর ওপরে গেলে আমরা বন্দরে বিপদ সংকেত জারি করি। জেটিতে ১৮টা জাহাজ ছিল। সবগুলোকে সাগরে পাঠিয়ে জেটি জাহাজশূন্য করা হয়েছে। জেটিতে লোডিং-আনলোডিং বন্ধ আছে। কিছু ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানে পণ্য তুলে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা বলেছি, আঘাতের আভাস পাবার সঙ্গে সঙ্গে জেটি এলাকা খালি করে দিতে হবে।’
‘বহিঃনোঙ্গরে ৭০ টার মতো মাদার ভ্যাসেল ছিল। সেগুলোকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। বন্দর সীমানায় এখন আর কোনো জাহাজ নেই। এখন আমরা বন্দরের ইক্যুইপমেন্টগুলো সুরক্ষার ব্যবস্থা করছি। জাহাজ চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ আছে। কর্ণফুলী নদীতে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল ও ঘাটে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ আছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলো নদীতে অবস্থান করছে। সাগরে অবস্থানরত নৌকা-ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে যে কোনো ধরনের তথ্যের জন্য 01320-108399 নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরী ও আশপাশের এলাকায় সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আকাশ মেঘলা আছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসেছে।
সারাবাংলা/আরডি/এনইউ