ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ধ্বংসাত্মক রূপ নিয়ে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপকূলে আঘাত করবে। আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারারাত তাণ্ডব চালিয়ে সকালে উপকূল অতিক্রম করতে পারে সিত্রাং।
শিগগিরই মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ড. এনামুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। পাঠানো হয়েছে পর্যাপ্ত খাবার।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে এ নিয়ে জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে উপকূলে আঘাত করবে সিত্রাং। কেন্দ্র অতিক্রম করবে সকালে। এরইমধ্যে দেশের সব সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সংকেত দেওয়া হবে। তবে সেটা মহাবিপদ সংকেতেও পৌঁছাতে পারে।’
তবে এটি সিডরের মতো ধ্বংসাত্মক হবে না আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিডর ছিলো সুপার সাইক্লোন। এর পরে আরেকটা স্টেজ আছে ভেরি সিভিয়ার, তারপর সিভিয়ার। এটি সিভিয়ার। এটার বাতাসের যে গতিবেগ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার রয়েছে সেটাকে সিভিয়ার সাইক্লোন বলা হয় গতকাল ভারতের দিকে গতি দেখা গেলেও এখন দেখা যায় সিত্রাং পুরোটা সময় বাংলাদেশের উপকূলেই অবস্থান করবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে উপকূলের ১৩টি জেলায়। এরমধ্যে সবচেয়ে আঘাত আসবে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা এলাকায়।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় অঞ্চলে ৭ হাজার ৩০টি শেল্টার হোম প্রস্তুত করা হয়েছে। সকাল থেকে সে সকল আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষদের সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। মাঠ প্রশাসন যেভাবে কাজ শুরু করেছে তাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে শতভাগ মানুষ সরিয়ে আনা যাবে। সেনাবাহিনী, আনসার দুর্গম এলাকা থেকে মানুষ সরিয়ে আনতে কাজ করছে। রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি সেচ্ছাসেবীরা একসঙ্গে কাজ করছে। মৎস্য প্রাণিসম্পদ ও কৃষিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন।’
প্রতি জেলায় নগদ ৫ লাখ টাকা শুকনো খাবার চাল, লবণ, তেল সব পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো জেলায় যদি আরও বাড়তি আশ্রয়কেন্দ্রের দরকার হয়, তাহলে সেটারও ব্যবস্থা করা আছে। এরইমধ্যে মানবিক সহায়তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিন বেলা সবাইকে সহায়তা দেওয়া যায়। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বলেছেন প্রথানমন্ত্রী। পাশাপাশি গবাদি পশুদেরও আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’