Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমাবেশে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিধান নিয়ে রিটের আদেশ রোববার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৭ অক্টোবর ২০২২ ১৮:৫৫

হাইকোর্ট

ঢাকা: সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ অনুসারে পুলিশ কমিশনারের ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য রোববার (৩০ অক্টোবর) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই দিন ধার্য করেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।

আজ রিটের শুনানিতে আদালত আইনজীবী আব্দুল মোমেন চৌধুরীকে এ বিষয়ে বিভিন্ন নজির উপস্থাপন করতে বলেন। তখন তিনি এ বিষয়ে ভারতের একটি নজির তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভারতের আদালত বলেছেন সভা-সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি নেওয়ার কোনো দরকার নেই। পুলিশ হচ্ছে জনগণের বন্ধু। তারা সমাবেশ করতে জনগণকে সহযোগিতা করবে। কিন্তু ঢাকায় সমাবেশ করতে ডিএমপি কমিশনারের অনুমতি নিতে হয়। এটা হতে পারে না।

তিনি বলেন, পুলিশকে আনকন্ট্রোল পাওয়ায় দেওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। তারা সহযোগিতা করবে। তারা সার্ভেন্ট। তারা মাস্টার নন। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

আইনজীবী আদালতে আরও বলেন, পুলিশকে আমার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। সে তো আমার বন্ধু হবে। এটা কেন? এখানে আমি এসেছি প্রহিবিশন। প্রত্যেক নাগরিকদের অধিকার আছে সভা সমাবেশের। তাহলে পুলিশের কাছে পারমিশন নেব কেন? এ সময় রিটকারী আইনজীবীও ভারতের নজির তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ যে বাধা দিয়েছে তা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ডিএমপি কমিশনার ২৮টি রুল করেছে। একটি অর্ডিন্যান্সের ওপর। এটা কীভাবে সম্ভব?

এরপর অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা আর্টিকেল ৩৭ তো সরকার করেছে। এটা কমিশনার করেনি। আমার প্রতিপক্ষ আর্টিকেল ৩৭ সাংঘর্ষিক বলছেন। সংবিধান মানতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করতে হবে। জনস্বার্থে জনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মানতে হবে। আমার প্রতিপক্ষ আইনটা। এটা তো ১৪৪ ধারার মতো। যেটা মহানগরের বাইরে করা হয়। এই আদেশ পুলিশ দিতেই পারে। এমনকি এটা আমাদের সিআরপিসিতেও আছে।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল এ রিট আবেদনটি সামারিলি রিজেক্ট ( সরাসরি খারিজ) করার আর্জি জানান। পরে আগামী রোববার রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

এর আগে গত ২০ অক্টোবর জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবির, চাঁদুপর বারের আইনজীবী সেলিম আকবর, ও রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইয়াসিন এ রিট দায়ের করেন।

আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

রিটে এই অধ্যাদেশের অধীন পুলিশের দায়মুক্তির বিধান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রুলস-২০০৬ এর বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস-২০০৬ এর বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ এ বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ব্যতীত ৩০ দিনের বেশি বলবৎ থাকবে না।

১০৫ এ বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা তদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোন বিধি, প্রবিধান আদেশ বা নির্দেশের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজ বা ক্ষতির জন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।

সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

জনসমাবেশ পুলিশের নিষেধাজ্ঞা

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর