ছাত্রদল নেতা ‘হত্যা’: পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ
২৭ অক্টোবর ২০২২ ১৯:৩৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের রাউজানে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নালিশী মামলা দায়েরের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ আজিজ আহমেদ ভূঁইয়া এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পিপি শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
পাঁচ বছর আগে ছাত্রদল নেতা নুরুল আলম ওরফে নুরুকে ‘হত্যা’র অভিযোগ এনে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমান এই নালিশী মামলার আবেদন করেছিলেন।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল- চট্টগ্রামের সাবেক পুলিশ সুপার ও বর্তমানে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা, রাউজান থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কেফায়েত উল্লাহ ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখ মো. জাভেদ।
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম ওরফে নুরুর লাশ রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের কর্ণফুলী নদীর তীর থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, নুরুর মাথায় গুলি এবং সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। হাত-পা রশি দিয়ে ও শার্ট দিয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়। মুখের ভেতর ওড়না ঢোকানো পাওয়া যায়।
ওইদিন দুপুরে বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া ঠেলারঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীরে গিয়ে নুরুর লাশ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী, বোন ও ভগ্নিপতি। তখন পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছিলেন, ২৯ মার্চ রাত ১২টার দিকে সাদা পোশাকের কয়েকজন নুরুকে নগরীর চন্দনপুরা এলাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
রাউজানের স্থানীয় রাজনীতিতে নুরু একাত্তরে মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া যুদ্ধাপরাধী সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ছিলেন। সাকা চৌধুরীর ভাই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, রাউজান থানার নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাভেদ (শেখ জাভেদ) ছাত্রদল নেতা নুরুকে চন্দনপুরা এলাকার বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া ঠেলারঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীরের পাশে ফেলে দেন।
তবে রাউজান থানা পুলিশ সে সময় চট্টগ্রাম নগরীতে তাদের কোনো অভিযান ছিল না এবং নুরুকে তারা আটক বা গ্রেফতার করেনি বলে জানিয়েছিল।
এ ঘটনায় পাঁচ বছর পর দাখিল করা নালিশী মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা পরিকল্পিতভাবে নুরুকে বাসা থেকে তুলে রাউজানের নোয়াপাড়া কলেজ মাঠে নিয়ে রাত ৩টা পর্যন্ত অমানুষিক নির্যাতন করে এবং পরে মাথায় গুলি করে হত্যা করে লাশ বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া ঠেলারঘাটে কর্ণফুলী নদীর তীরে ফেলে দেন।
মামলার আবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর ১৩ (১), ৫ (২), ৪ (১) (ক) ও ১৫ (২) ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার আরজি জানিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন বাদী।
আরও পড়ুন: ছাত্রদল নেতা ‘হত্যা’: ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
জেলা পিপি ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত ২০০ ধারায় বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা করে আদালত মামলাটি খারিজের আদেশ দিয়েছেন।’
সারাবাংলা/আরডি/ইআ