নিষেধাজ্ঞা শেষে বাজারে ইলিশ, দাম চড়া
২৯ অক্টোবর ২০২২ ১৩:০৭
বরিশাল: ইলিশ আহরণ, পরিবহন এবং কেনা-বেচার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে নদী ও সাগরে ইলিশ শিকারে নেমেছেন জেলেরা।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মাছের আড়তগুলোতে ইলিশের দেখা মিলছে। প্রথম দিন হওয়ায় ইলিশের দাম অনেকটা বেশি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। তবে যেসব ইলিশ আসছে তার বেশির ভাগই ডিমওয়ালা ইলিশ বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
বরিশালের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পোর্টরোড মোকামের ঘাটে ট্রলার, নৌকা ও স্পিড বোটে করে মাছ নিয়ে আসেন জেলে ও ব্যবসায়ীরা। নৌযান থেকে আড়তদারদের গদির সামনে সেই মাছ নিতে শ্রমিকদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরগরম হয়ে ওঠে ইলিশ মোকাম। ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর পুরো মোকাম এলাকা। খুচরা ও পাইকারি ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
আর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ঝিমিয়ে থাকা এ পাইকারি বাজারে ইলিশ আসায় বেচা-বিক্রিতেও অনেকটাই চাঞ্চল্য লক্ষ্য করা গেছে। নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনে ইলিশের দাম নিয়ে বেশিরভাগ ক্রেতাই জানিয়েছেন ঊর্ধ্বমুখী দরের কথা। সেইসঙ্গে পুরাতন মাছের আমদানি হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
বিক্রেতাদের দাবি, দাম তেমন একটা বেশি নয়। তারা জানিয়েছেন, ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের প্রতি মণ ইলিশের পাইকারি মূল্য ২৫-২৬ হাজার টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৪০-৪২ হাজার, ১২০০ গ্রামের বেশি প্রতি মণ ইলিশের মূল্য রাখা হয়েছে ৪৫-৪৮ হাজার টাকা।
এদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা পাইকারদেরও উপস্থিতি ছিল বরিশালের পাইকারি বাজারগুলোতে। তাদের ও আড়তদারদের কেনা ইলিশ ককশিটে বরফ দিয়ে সকাল থেকেই প্যাকেটজাত করতে ব্যস্ত ছিলেন শ্রমিকরা।
আউয়াল হোসেন নামে একজন ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে কিছু কিছু মাছ এতোটাই লাল হয়েছে, যে সেগুলো ধরলেই নরম মনে হচ্ছে। এগুলো আরও আগে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ধরা হয়েছে।’
যদিও এরকম কিছু করার সুযোগ পোর্টরোডের ব্যবসায়ীদের নেই বলে দাবি করে পাইকাররা বলছেন, ‘শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত স্থানীয় নদীতে শিকার করা ইলিশ মাছগুলো বাজারে এসেছে। ফিসিং বোটগুলো শুক্রবার গভীর রাতে ও শনিবার সকালে সাগরের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে দুই-এক দিনের মধ্যে সাগরের ইলিশ আসা শুরু করবে। আর তখন বাজারে ইলিশের কাঙ্ক্ষিত আমদানি হলে দরও কমে যাবে।’
সোহেল রানা নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞায় প্রশাসনের কঠোরতার কারণে কেউ নদীতে নামেনি। তাই বাজারে যে মাছ এসেছে তা গত রাতের ধরা। বাজারে ইলিশের দর তেমন একটা বেশি ছিল না। আর এতো অল্প সময়ে যে পরিমাণ মাছ পাওয়া গেছে তাও সন্তোষজনক। আশা করি সামনে ইলিশের আমদানি আরও বাড়বে।’
কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ, কীর্তনখোলা, তেতুলিয়া ও কালাবদর নদীতে নামা জেলেরা বলছেন, কয়েকদিন পরেই শীতের শুরু। তবে নিষেধাজ্ঞা শেষে যে মাছ ধরা পড়ছে, তাতে পুরোদমে শীত নামার আগেই বেশ মাছ ধরা পড়বে।
সারাবাংলা/ইআ