Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুনের ৩০ বছর পর ৬ জনের যাবজ্জীবন, ৬ জনের আগেই মৃত্যু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৮:০০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে চা-দোকানি তরুণকে পিটিয়ে জখম এবং চিকিৎসা নিতে বাধা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার অভিযোগে দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় ছয়জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাাদয়ে আরও ছয় মাসের সাজা দিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩০ বছর পর রোববার (৩০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শফিকুর রহমান মজুমদার এ রায় দিয়েছেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

দণ্ডিতরা হলেন- তিন ভাই দিল মোহাম্মদ, নজরুল ইসলাম ও কবির আহমদ এবং মোহাম্মদ আলী, দুলা মিয়া ও হারুনুর রশীদ নামে আরও তিনজন।

মামলায় ঘটনার নেতৃত্বদাতা সাবের আহমদসহ আরও ছয়জন আসামি ছিলেন। ৩০ বছর ধরে চলা বিচার কার্যক্রমের মধ্যেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে সাবেরের তিন ছেলের কারাদণ্ড হয়েছে।

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর সকালে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা গ্রামে সাদ্দাম হোসেন নামে এক তরুণকে হত্যা করা হয়েছিল।

মামলার নথিপত্রের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা পিপি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে জানান, সাদ্দামের বড়ঘোনা বেড়িবাঁধের ওপর একটি চায়ের দোকান ছিল। কাছাকাছি দোকান ছিল একই গ্রামের সাবের আহমদের।

এজাহার-অভিযোগপত্রের তথ্য ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, সাদ্দাম দোকান চালুর পর সাবেরের দোকানে বিক্রি কমে যায়। সাবের ও তার ছেলেরা কয়েকদফা সাদ্দামকে সেখান থেকে দোকান সরিয়ে নিতে হুমকি দেন। কিন্তু সাদ্দাম দোকান চালু রাখেন। ঘটনার দিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে সাবের আহমদ তার ছেলে ও সহযোগীসহ মিলে ওই দোকানে হামলা করে। প্রাণ বাঁচাতে সাদ্দাম দৌড়ে নিজের ঘরে চলে যায়। তার বাবা-মা তাকে ভেতরে রেখে বাইরে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। সাদ্দাম কাঁচা বসতঘরের ছাদে আশ্রয় নেয়। হামলাকারীরা বাড়িতে এসে দরজার তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে সাদ্দামকে খুঁজে বের করে আনে। ছাদ থেকে লাথি মেরে তাকে নিচে ফেলে দেয়। এরপর নিমর্মভাবে মারধরের একপর্যায়ে তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত এসে যায়। এরপর হামলাকারীরা সেখান থেকে গিয়ে রাস্তায় পাহারা বসায়। সাদ্দামকে তার বাবা হাসপাতালে নিতে চাইলে বাধা দেয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

এ ঘটনায় সাদ্দামের বাবা জানে আলম বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৪ সালের ৩০ এপ্রিল ১২ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পুলিশ। ১৯৯৮ সালের ১১ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১২ জনের সাক্ষ্য শেষে আদালত জীবিত ছয় আসামিকে সাজা দিয়েছেন।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ’১২ আসামির মধ্যে সাবেরসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি ছয় আসামি জামিনে ছিলেন। যুক্তিতর্ক শুনানির শেষদিন তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। আজ (রোববার) রায় ঘোষণার সময় তাদের আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।’

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড