আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে ‘পলাতক’ শিবির নেতা ও ব্যবসায়ী গ্রেফতার
২ নভেম্বর ২০২২ ০০:০৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: একজন ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা। আরেকজন জামায়াত সমর্থক পুস্তক ব্যবসায়ী। ব্যবসার নামে ঋণ নিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত করে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে ঢাকায় একটি মাদরাসায় যোগ দিয়েছিলেন ওই শিবির নেতা। আর বই প্রকাশনার নামে বিভিন্নজনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যান অপরজন।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানা পুলিশ রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। উভয়ের বিরুদ্ধে আদালতের সাজা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেফতার দু’জন হলেন- মোহাম্মদ সাইফুল আলম (৪০) ও আনোয়ার হোসেন (৪৫)। সাইফুল নগরীর নন্দনকানন এলাকার বাসিন্দা। ঢাকার বনশ্রীতে ‘নিবরাস মাদরাসা’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
আনোয়ার হোসেনের বাড়ি ফেনী জেলায়। নগরীর আন্দরকিল্লায় শাহী জামে মসজিদ সংলগ্ন আল জামিয়া মার্কেটে পূবালী লাইব্রেরি নামে তার একটি প্রতিষ্ঠান আছে, যেখান থেকে তিনি বই প্রকাশ করতেন। এছাড়া ঢাকার পুরানা পল্টনের ‘এনএটিই গ্রুপ’ নামে প্রকাশনাভিত্তিক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘সাইফুল ২০০৮ সালে কোতোয়ালি থানা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ছিলেন। ২০১০ সালের পর মহানগর ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। নন্দনকানন এলাকায় গ্লাসশিটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে এলাকার বাসিন্দা হিসেবে তার সুসম্পর্ক ছিল। সেটাকে কাজে লাগিয়ে গ্লাসশিটের ব্যবসার কথা বলে কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক কোটি টাকারও বেশি ঋণ নেন। তিনবছর আগে সেগুলো পরিশোধ না করে পালিয়ে যান ঢাকায়। সেখানে একটি মাদরাসায় চাকরি করছিলেন।’
ওসি জানান, সাইফুলের বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে কোতোয়ালি থানায়। এর মধ্যে পাঁচটি সাজা পরোয়ানা। এসব পরোয়ানা মূলে তাকে মঙ্গলবার ভোরে বনশ্রীর নিবরাস মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বিকেলে তাকে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গ্রেফতার আনোয়ার হোসেনের বিষয়ে ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, ‘আনোয়ার বই প্রকাশের নামে বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা নেন। কিন্তু বই প্রকাশ না করে সেই টাকা আত্মসাত করে কয়েক বছর আগে ঢাকায় পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা আমরা পাই। সেই পরোয়ানা মূলে তাকে পল্টন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আনোয়ার জামায়াত সমর্থক পুস্তক ব্যবসায়ী বলে শুনেছি। কোনো পদ-পদবি আছে কি না সেটা আমরা যাচাইবাছাই করে দেখছি।’
আনোয়ার হোসেনকেও মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম