রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল
২৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৮:০০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) ২৬ সদস্যদের একটি দল কক্সবাজারে গেছেন।
শনিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে ইউএনএসসি’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো মেজা-কুদরার নেতৃত্বে ২৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসেন। বাংলাদেশে পৌঁছালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তাদের স্বাগত জানান।
জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি রয়েছে ২৬ সদস্যদের দলে। রয়েছে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং চীনের সহ-স্থায়ী প্রতিনিধিরা। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং চীন এই দেশগুলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। আরও রয়েছে নেদারল্যান্ডস, কুয়েত, বলিভিয়া, ইথিওপিয়া, কাজাখাস্তান, পেরু, পোলান্ড, সুইডেন এবং আইভরি কোস্টের প্রতিনিধিরা।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৬ সদস্যদের এদিন (শনিবার) কক্সকাজারে থাকবেন। আগামীকাল (রোববার) সকালে তাদের কক্সবাজারের একাধিক রোহিঙ্গা শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্য রেখাও পরিদর্শন করতে পারে।
রোববারই ঢাকায় ফিরে হোটেল রেডিসন ব্লুতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের নিমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেবেন জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আগামী সোমবার দুপুরে প্রতিনিধি দলটির সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবে প্রতিনিধি দল। তবে রোহিঙ্গা নির্যাতনের মূল স্থান রাখাইন অঞ্চলে প্রতিনিধি দলটিকে মিয়ানমার পরিদর্শনের অনুমতি দেবে কি না তা এখনো স্পষ্ট না।
প্রতিনিধি দলটির বাংলাদেশ সফরের উদ্দেশ্য হলো, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে সার্বিক তথ্য সরাসরি জানা। বিশেষ করে নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ এবং সামনের বর্ষা মৌসুমে কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবস্থা কী হবে তা নিরুপন করা।
পরিদর্শন শেষে ফিরে গিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নতুন করে রেজ্যুলেশন পাস করার কথা রয়েছে প্রতিনিধি দলটির। তবে নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতাধর কয়েকটি রাষ্ট্রের কারণে তা সম্ভব হবে কি না এই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মনসুর আল-ওতাইবি নিরাপত্তা পরিষদের সফরকে কেন্দ্র করে এক বিবৃতিতে বলেন, এই সফর কোনো লোক দেখানো সফর নয়। আমরা প্রকৃত অর্থেই রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান চাই।
গত বছরের আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর নির্যাতন শুরু হলে সীমান্ত দিয়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ এখনো অব্যাহত রয়েছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বর্তমানে কক্সবাজারসহ দেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
সারাবাংলা/জেআইএল/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook