সাহসের সঙ্গে আন্দোলন করে যেতে বললেন খালেদা
২৮ এপ্রিল ২০১৮ ১৯:০২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য দলের নেতা-কর্মীদের সাহসের সঙ্গে আন্দোলন করে যেতে বলেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
শনিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা দেখা করতে গেলে তাদের মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মীদের এ নির্দেশ দেন তিনি।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘উনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন, দেশবাসী যেন তার সুস্থতার জন্য দোয়া করেন এবং দেশ ও জাতির জন্য যে দুঃসময় চলছে তার যেন অবসান ঘটে।’
‘নেতা-কর্মীদের তিনি সাহসের সঙ্গে আন্দোলন করে যেতে বলেছেন গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য’— বলেন মির্জা ফখরুল।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা তাকে যা দেখেছি, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। তার শরীর আসলে অত্যন্ত খারাপ এবং তার আশু চিকিৎসা প্রয়োজন, হাসপাতালে রেখে— তিনি যে হাসপাতালে যেতে চেয়েছেন সেই হাসপাতালে রেখে।’
ফখরুল বলেন, ‘তার বা হাত আস্তে আস্তে শক্ত হয়ে যাচ্ছে, ওজনও বেড়ে গেছে বাম হাতের। বাম পা থেকে শুরু করে গোটা বাম দিক— পেছন পর্যন্ত ব্যথা বেড়ে গেছে। এখন সাধারণভাবে হাঁটা-চলা করাও তার জন্য মুশকিল হয়ে গেছে। তার যে প্রবলেম—এই প্রবলেম থেকে আস্তে আস্তে নিউরো প্রবলেমের সৃষ্টি হয়। আস্তে আস্তে এটা প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।’
‘চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে তার। ডান চোকটা লাল হয়েছে। এটা বেড়ে গেলে চোখটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে’— বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আর কোনো বিলম্ব না করে অবিলম্বে তিনি যে হাসপাতালে যেতে চেয়েছেন, ইউনাইটেড হাসপাতাল— সেই হাসপাতালে রেখে তাকে বিশেষভাবে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এটা সরকারের দায়িত্ব। এটা যদি কোনো রকম ব্যত্যয় ঘটে এবং তার যদি কোনো রকম শারীরিক ক্ষতি সাধিত হয়, তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তার সঙ্গে শুধু তার শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত দিক নিয়েই কথা হয়েছে। ইতিপূর্বে ডাক্তাররা যে ঔষুধ তাকে দিয়েছেন তা কাজ করছে না। অর্থাৎ ব্যথার উপশম হচ্ছে না। সেই জন্য বার বার একই বিষয়ে কথা হয়েছে তার সঙ্গে। তার পরিবেশটা পরিবর্তন করা প্রয়োজন। ওই পরিবেশে সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ মানুষ ওখানে সুস্থ হতে পারে না।’
বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে কারা ফটকে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও নজরুল ইসলাম খান। ২০ মিনিট অপেক্ষার পর বিকেল ৩ টা ৫০মিনিটে তারা কারাগারের ভেতরে যাবার অনুমতি পান।
এর আগে গত ১৯ এপ্রিল খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা কেরতে গিয়ে কারা ফটক থেকেই ফিরে এসেছিলেন এই তিন নেতা।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা। এ নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে দেখা করে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি জানান তারা।
দুর্নীতির একটি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হাত-পা, মেরুদণ্ড ও ঘাড়ের ব্যথার পাশাপাশি চোখের সমস্যাতেও ভুগছেন।
গত ৭ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) আনা হয়।
সারাবাংলা/এজেড/জেডএফ