Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘খালেদাকে জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৩৪

ঢাকা: খালেদা জিয়াকে ‘জেলে পাঠানোর হুমকি দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগীর।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবার জেলে পাঠানো হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তারা যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা যে বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না— এ বক্তব্যে তা পরিষ্কার হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এ ধরনের উক্তি করেছেন তিনি।’

‘হুমকি-ধমকিতে’ আন্দোলন থামানো যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণকে ভয় পাচ্ছে, মানুষকে ভয় পাচ্ছে। যেভাবে মানুষ জেগে উঠছে, এখানে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে। গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) সরানো হবে।’

‘সে কারণেই আমরা অনেকবার বলেছি যে, এখনও সময় আছে সেইভ এক্সিট নেন। রিজাইন করেন এবং ক্ষমতা কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের হাতে দেন। তাহলে একটা সেইভ এক্সিট হতে পারে। তা না হলে পালাবার পথ খুঁজে পাওয়া যাবে না’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার অপশাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কোনো সভ্য দেশে সরকারের হরতাল দেওয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। কোনো সভ্য দেশে চিন্তা করতে পারেন যে, সরকার হরতাল দিয়ে দেয়? এরা হরতাল দিচ্ছে। বরিশালে পাঁচদিন আগে থেকে বলে দিয়েছে যে, পরিবহন বন্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন হঠাৎ করে নৌপরিবহনও বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি যে স্পিডবোটগুলো ভোলা থেকে বরিশালে আসে, সেগুলো পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। আজকে আবার প্রাইভেটকারও নাকি বন্ধ করে দিয়েছে। এটিকে কোন ক্যাটাগরিতে ব্যাখ্যা করবেন তারা?’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে এটা সম্পূর্ণভাবে তাদের দুর্নীতির কারণে। প্রতিটি ক্ষেত্রে, পদে পদে তারা দুর্নীতি করছে। গত ১০ বছরে কানাডায় যারা মাইগ্রেট করেছেন তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ বাংলাদেশি। এ কারণে রেমিটেন্স কমে গেছে। রেমিটেন্স কমছে কিন্তু শ্রমিকের সংখ্যা কমেনি, আরও বেড়েছে।’

‘তাহলে রেমিটেন্সটা কোথায় যাচ্ছে? আমি আগের দিনও বলেছি যে, এই রেমিটেন্স বিদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই কাজটা করছেন সরকারি দলের সঙ্গে যারা জড়িত আছেন তারাই। হুন্ডি করে তারা রেমিটেন্স পাচার করছে। যে কারণে দেশে আজকেসংকট সৃষ্টি হয়েছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ‘ধ্বংস’ করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বহুদলীয় গণতন্ত্রকে তারা ধবংস করে নতুন একটা মোড়ক দিয়েছে। দেশে গণতন্ত্রের মোড়ক আছে, কিন্তু ভেতরে পুরোপুরিভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা, যেটা বাকশালের মতো। গত এক যুগে তারা আমাদের ৩৫ লাখের উপরে নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, ৬০০’র উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, সহস্রাধিক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে।’

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশ দিয়ে বিএনপির চলমান বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হবে বলে জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করছি। ঢাকায় হবে লাস্ট বিভাগীয় সমাবেশ। এরপরে দায়-দায়িত্ব তো সরকারের, তারা কী করবে না করবে। আওয়ামী লীগ কী ঘোষণা করল না করল আমরা আমাদের লক্ষ্যে অটুট, অবিচল। সেখান থেকে আমরা এক পা নড়ব না এবং দেশের মানুষও নড়বে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যে সংগ্রাম আমরা শুরু করেছি, সেই সংগ্রাম আমরা চালিয়ে যাব অ্যাট অ্যানি কস্ট।’

সারাবাংলা/এজেড/একে

আওয়ামী লীগ আন্দোলন খালেদা জিয়া টপ নিউজ বিএনপি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর