‘আ.লীগ এখন রাজনৈতিক দল নয়, ব্যবসায়ী সংগঠন’
৬ নভেম্বর ২০২২ ২১:৩১
চট্টগ্রাম ব্যুরো : আওয়ামী লীগ এখন রাজনৈতিক দল নয়, ব্যবসায়ী সংগঠনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন।
রোববার (৬ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর জামালখানে রীমা কমিউনিটি সেন্টারে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে নগর বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। সাত নভেম্বরকে বিএনপি দলীয়ভাবে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে।
বিএনপির ঘোষিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই। এটি একটি ব্যবসায়ী সংগঠনে পরিণত হয়েছে।’
এ বক্তব্যের সূত্র হিসেবে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে এটি আওয়ামী লীগ সরকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আবার সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিপেক্ষ আওয়ামী লীগ নিজেরাই আন্দোলন করেছ। এখন আবার সিআরবিতে মিটিং করে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, হাসপাতাল হবে না। প্রধানমন্ত্রী নাকি ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জনসভা থেকে সিআরবিতে হাসপাতাল না হওয়ার ঘোষণা দেবেন।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে শাহাদাত বলেন, ‘আপনাদের কে বলেছিল হাসপাতাল করার ঘোষণা দিতে? নিজেরা নিজেরা আন্দোলন করে এখন আবার বলছেন হাসপাতাল হবে না। আপনারা নিজেরাই বললেন সিআরবিতে হাসপাতাল হবে, আবার নিজেরাই বলছেন হবে না। হায়রে আওয়ামী লীগের রাজনীতি!’
আওয়ামী লীগের কথায় বিচার বিভাগ চলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কয়েকদিন আগে বলেছেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে জেলে ঢোকানো হবে। আবার আইনমন্ত্রী বললেন, নির্বাচনের আগে জেলে যেতে হবে না। তাহলে কি দাঁড়ালো? আওয়ামী লীগ যা-ই বলে বিচার বিভাগ সেটিই করে। শুধু বিচার বিভাগ নয়, দেশে কোনো বিভাগের এখন স্বাধীনতা নেই।’
সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক হায়াত হোসেন বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল। সেই চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেশপ্রেমিক সিপাহী এবং জনগণ ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে মুক্ত করেছিলেন। আমরা মনে করি ৭ নভেম্বর না হলে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতো না।’
চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করলেও স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পেতে গোটা জাতিকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। যুদ্ধোত্তর দেশে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর রাষ্ট্র পরিচালনায় সীমাহীন অযোগ্যতা, ও পদলেহী পররাষ্ট্রনীতির কারণে স্বাধীনতা বিপন্ন হতে বসেছিল। একদিকে শাসকদের সীমাহীন লুটপাট, অন্যদিকে বিরোধী মতাদর্শের রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা দেশকে এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। এ পরিস্থিতিতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির উত্থান যখন নিশ্চিত হয়ে ওঠে, তখন সিপাহী জনতার বিপ্লবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষা পায়। আর সেই ক্রান্তিকালে দেশের হাল ধরেছিলেন রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন বার কাউন্সিলের সদস্য এ এস এম বদরুল আনোয়ার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, নগর কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এস এম নসরুল কদির, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক, সাবেক পিপি আবদুস সাত্তার, মুফিজুল হক ভূইয়া, ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম।
সারাবাংলা/আরডি/একে