অর্থ পাচারকারীদের ‘সামারি ট্রায়ালে’ দেওয়া উচিত: হাইকোর্ট
৮ নভেম্বর ২০২২ ২২:১৪
ঢাকা: যারা বেসিক ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকা লুটপাট, পাচার ও আত্মসাৎ করেছে, তাদের বিচার ‘সামারি ট্রায়ালে’ (দ্রুত বিচার) হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলার আসামি মোহাম্মদ আলীর জামিন শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে এদিন আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল হোসেন ও আইনজীবী মো. জুবায়দুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
আদালতের শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, ‘পাঁচ বছর পার হয়ে গেলেও মামলায় চার্জশিট দিচ্ছে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সে কারণে বিচারও শেষ হচ্ছে না।’
তখন আদালত বলেন, ‘অর্থপাচারকারীরা জাতির শত্রু। কেন এত বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও এসব মামলার বিচার হবে না?’ তখন দুদককের আইনজীবীর কাছে আদালত জানতে চান, ‘কেন মামলার চার্জশিট দিচ্ছেন না।’ এ সময় অর্থ লুট ও পাচারের এসব মামলায় সামারি ট্রায়াল (দ্রুত বিচার) হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন আদালত।
পরে বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত সব মামলার হালনাগাদ তথ্য আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দুদককে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন শান্তিনগর শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। অন্য চারটি মামলা জামিন আবেদন শুনানির অপেক্ষায় আছে।
এই আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেসিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর জামিন শুনানিতে দুদকের প্রতি প্রশ্ন রেখে আদালত বলেছেন, কেন চার্জশিট দিচ্ছেন না? অর্থ লুটপাট ও পাচার মামলায় কেন সামারি ট্রায়াল হবে না?’
এ সময় অর্থপাচার সংক্রান্ত এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সামারি ট্র্যায়ালে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন আদালত। শুনানি শেষে আদালত বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত সব মামলার হালনাগাদ তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুনানি শেষে আসামি মোহাম্মদ আলীর আইনজীবী মো. জুবায়দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন ম্যানেজার মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ১৫ থেকে ১৬টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গত ২০ এপ্রিল তিনটি মামলায় জামিন আবেদন করা হয়েছিল। তখন আদালত জামিন আবেদনের শুনানি ছয় মাসের মুলতবি রেখে দুদককে এই সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু দুদক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় আজ জামিন শুনানি হয়। শুনানির পর আদালত বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত সব মামলার হালনাগাদ তথ্য জানতে চেয়েছেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম