কর্ণফুলী ‘দখল করে’ ড্রাইডকের নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ
৯ নভেম্বর ২০২২ ২২:৫২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কর্ণফুলী নদী দখল করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘কর্ণফুলী ড্রাইডকের’ নির্মাণ কাজ সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।
বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের ‘কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয় দখল ও দূষণ’ সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি বিষয়টি জানান। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান।
মনজুর আহমেদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘নদী পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি মেরিন একাডেমির পাশে কর্ণফুলী ড্রাইডক গড়ে উঠেছে নদী দখল করে। ড্রাইডকটির আশপাশে আরও বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এটা বন্ধের নির্দেশ দিচ্ছি। বন্ধ করে জেলা প্রশাসক কমিশনকে অবহিত করবেন। এরপর একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি তদন্ত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
সভায় উপস্থিত কর্ণফুলী ড্রাইডকের প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর ও জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে আমরা ড্রাইডক করেছি। বন্ধের বিষয়ে করণীয় কী, এখনই কোনো মন্তব্য করব না।’
আগেরদিন মঙ্গলবার নদী কমিশনের চেয়ারম্যান কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি কর্ণফুলী নদীর দখল ও দূষণ দেখে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখানে অনেক সরকারি সংস্থা আছে। সিটি করপোরেশন, সিডিএ, বন্দর, জেলা প্রশাসনের চোখের সামনে কিভাবে একটি নদী দখল হয়ে গেল?’
বুধবারের সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের হাইড্রোগ্রাফার নাসির উদ্দিন নদী কমিশনের চেয়ারম্যানকে কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিশারিঘাটের ইজারার বিষয়টি অবগত করেন। সভা শেষে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘ফিশারিঘাটের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ওই অংশটিতে ড্রেজিং করলেও পলি জমে যায়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে ওই স্থানটি ফিশারিঘাটকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেওয়া হবে। তারা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
‘আমদানি-রফতানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা কমেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান নদী দখল করেছে। আরও দখল হচ্ছে। আদালতের রায় অনুসারে এসব বন্ধ করতে হবে। কর্ণফুলী নদীর প্রবাহ বা নাব্যতা যদি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। যে ছোট একটা ঘর তুলে নদীর পাড়ে থাকছে সে–ও অবৈধ দখলদার। কিন্তু যে বড় বড় স্থাপনা গড়ে
তুলেছে, সে আরও বড় দখলদার। তাই সবাইকে উচ্ছেদ করতে হবে। তবে তা একটি প্রক্রিয়ার মধ্য
দিয়ে। আমাদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে।’
সভায় পরিবেশ অধিদফতর, চট্টগ্রাম বন্দর, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম