আওয়ামী লীগই অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা: ফখরুল
৯ নভেম্বর ২০২২ ২৩:০৭
ঢাকা: ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকেই অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন।
বুধবার (৯ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনটি সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-নেত্রীদের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এ মত দেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, ‘এই চলমান আন্দোলনের যে ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছে এবং তার যে গতি প্রতিদিন বাড়ছে এটাতে ভীত হয়ে তারা (ক্ষমতাসীনরা) আগের বিষয়গুলোকে নিয়ে আসছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্যটা হচ্ছে, অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেই, সরকার নিজেই।’
তিনি বলেন, ‘সে সময় যতগুলো ঘটনা ঘটেছে প্রতিটি ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের লোকেরাই (অগ্নি সন্ত্রাস) জড়িত। বাসের(অগ্নিসংযোগ) ব্যাপারটা নিশ্চয় মনে আছে আপনাদের। দেখা গেছে যে, বাসের মালিক হচ্ছে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রধান। চৌদ্দগ্রামে যেটা ঘটেছিল তার সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের লোকেরাই জড়িত। অথচ এ ঘটনায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
বিএনপি কোনো সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত নয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা (বিএনপি) একটা মুক্ত লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা নির্বাচন করা দল। কখনোই অগ্নিসন্ত্রাস বা সন্ত্রাস করে ক্ষমতায় যাইনি অতীতে। আমরা এখনো যেতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, এতগুলো সমাবেশ হয়েছে। প্রতিটি সমাবেশে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর কি রকম অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, আমাদের দল থেকে কোনো রকমের কোনো সন্ত্রাস বা উসকানি দেওয়া হয়নি। তারাই উসকানি দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’
‘অর্থাৎ চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য তারা এই পদ্ধতিটি বেছে নিয়েছে। কিন্তু তাতে কাজ হবে না। জনগণ দেখছে প্রতি মুহূর্তে কারা কি করছে। এখন তারা যেটাই করুক না কেন কাজে দেবে না। জনগণের একটাই দাবি- এই সরকারকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’— সরকারের মন্ত্রীদের এরকম বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছাড় কেউ কাউকে দেয় না। আদায় করে নিতে হয়। আর উনারা যে বডি ল্যাংগুয়েজে কথা বলছেন- ওটা থাকে না। শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে, এই ধরনের ফ্যাসিস্ট সরকার তাসের ঘরের মতো পড়ে যাবে। ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এরশাদের একই ধরনের কথাবার্তা ছিল, বডি ল্যাংগুয়েজ ছিল। ৬ তারিখে কিন্তু ধপাস।’
এদিন বিকাল ৪টায় মাইনরিটি জনতা পার্টি, বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাপ ও বিকাল ৫টায় সাম্যবাদী দলের সঙ্গে সংলাপে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সংলাপ শেষ হয় রাতে।
মাইনোরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলেরে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম নিজ নিজ দলের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
মাইনোরিটি জনতা পার্টির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দিলীপ কুমার দাস, মোহাম্মদ আবদুল হাই, কমলেশ কুমার দাস, নিরদ বরণ মজুমদার, অশোক কুমার সরকার, ভবতোষ মুখার্জী সুবীর, শন্তু নাথ দাস, পল্লব চ্যাটার্জী, উজ্জ্বল চন্দ্র দাস, শেখর চন্দ্র সরকার, সুমন কুমার সরকার, কেয়া সেন ও মিঠুর ভট্টচায্র্।
ন্যাপের প্রতিনিধিরা হলেন— পরেশ চন্দ্র সরকার, আব্দুল বারিক, নুরুজ্জামান, মেহেদি হাসান এবং ওমর ফারুক।
সাম্যবাদী দলের অন্য সদস্যরা হলেন— সুরাইফুল ইসলাম মাহফুজ, সাইফ উদ্দিন মাহমুদ, এরশাদ আলী, মেহেবুব মিয়া, আবু তাহের, শামসুল হক, আব্দুল গনি খান, সুমন হাওলাদার ও নুরুদ্দিন ঢালী,
আর বিএনপির মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম