যুবলীগের মহাসমাবেশ দুপুরে, আসতে শুরু করেছেন নেতা-কর্মীরা
১১ নভেম্বর ২০২২ ১১:৪৯ | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ১২:০৩
ঢাকা: প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীতে যুব মহাসমাবেশ করবে আওয়ামী যুবলীগ। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে। এদিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে সকাল থেকে আসতে শুরু করেছেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে বাস, পিকআপ ভ্যান ও ট্রাকে করে আসা নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন রয়েছে। এছাড়া কারও হাতে যুবলীগের পতাকাও দেখা যায়। এ সময় তারা বিভিন্ন শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন উদ্যানের চারপাশ। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকালে উদ্যানের চারপাশে ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশের জন্য পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেকে ইতোমধ্যে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল প্যান্ডেল। এছাড়া পুরো ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকা দিয়েও সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য রূপে।
মহাসমাবেশে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ উপস্থিতি ঘটাতে চায় দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনটির নেতারা। ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটিয়ে রাজপথের বিরোধী শক্তিকে বিশেষ বার্তা দিতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী এই সংগঠনটি।

সমাবেশে যোগ দিতে পায়ে হেঁটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাচ্ছেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা, ছবি: সারাবাংলা
যুবমহাসমাবেশটি সফলের লক্ষ্যে গত বুধবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যে মুহূর্তে দাড়িয়ে আমরা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা নিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, সেই মুহূর্তে বাংলাদেশ বিরোধী বিএনপি-জামায়াত স্থিতিশীল বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করছে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, করোনা পরবর্তী দীর্ঘ সময় পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১ নভেম্বর সরাসরি রাজনৈতিক কোনো জনসভায় উপস্থিত হচ্ছেন। সেটি যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ। এজন্য যুবলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা গর্বিত, উচ্ছ্বসিত ও উজ্জীবিত।
তিনি বলেন, সমাবেশটি আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে হলেও এই সমাবেশের অন্তর্নিহিত মর্ম স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, প্রতিরোধ গড়ে তোলা তথা বাংলাদেশকে রক্ষা করা। সে কারণে নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘যুব মহাসমাবেশ’এ বিশেষ বার্তা দিবেন। সেই বার্তা শোনার জন্যই মানুষের ঢল নামবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নামবে। আমরা বিশ্বাস করি, এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ‘যুব মহাসমাবেশ’।
তিনি জানান, সমাবেশ সফল করতে ১০টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য পাঁচটি গেট রাখা হবে। সকাল ১১টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে। এতে দেশবরণ্যে শিল্পী মমতাজ বেগম, পান্থ কানাই, কুনালসহ অনেকে অংশ নেবেন।
ইতোমধ্যে সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা করেছে। সমাবেশকে ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলাগুলোতে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

বাস ও পিকআপ ভ্যানে করে দূর থেকে সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য এসেছেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা, ছবি: সারাবাংলা
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যুব মহাসমাবেশে প্রবেশের জন্য ভিআইপি গেট ছাড়াও পাঁচটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। গেটগুলো হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মোড়ে অবস্থিত রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন গেট, মেট্রোরেল স্টেশন গেট, রমনা কালি মন্দির গেট, মেট্রোরেল গেইট-১ (মাজার গেইটের পরের গেইট) এবং মাজার গেট।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এ যুব সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুব সমাজকে সম্পৃক্ত করা। গত পাঁচ দশক ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম এবং হাজারও নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ দেশের বৃহত্তম যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
ক্যাসিনোসহ নানামুখী ভাবমূর্তির সংকট কাটিয়ে উঠতে সংগঠনের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসে যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিল। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশের হাতে নেতৃত্ব আসে। করোনা মহামারি সংকটে মানবিক সহায়তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করে, যা বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
সারাবাংলা/এনআর/এনএস