Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুব-জনতার মহাসমুদ্র: দেশসেবায় প্রস্তুত থাকার বার্তা আওয়ামী লীগের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ নভেম্বর ২০২২ ২৩:৩১

ঢাকা: প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীর যুবমহাসমাবেশে সংগঠনের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনে দেশসেবায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব মহাসমাবেশে উপলক্ষে লাখ লাখ যুব-জনতার উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে যুব মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের অন্যান্য নেতারা যুবলীগকে আগামী দিনে সব অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিলেন।

নেতারা বলেন, এ বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে এখন আর আন্তর্জাতিকভাবেও কেউ অবহেলার চোখে দেখে না। যারা আবার বাংলাদেশকে আগুন সন্ত্রাস মানুষ খুন করে ধ্বংসলীলায় পরিণত করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে যুবলীগ প্রস্তুত থাকবে দুর্বার গতিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।

শুক্রবার (১১নভেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে যুব মহাসমাবেশে এমন বার্তা দেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুব মহাসমাবেশের মূল পর্ব পরিচালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যানদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

সারাদেশের যুব-জনতার উপস্থিতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন যুবলীগের যুব মহাসমাবেশ ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের সড়ক ও এলাকাগুলো যুব-জনতার সমুদ্রে পরিণত হয়।

দুপুর আড়াইটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশস্থলে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল হোসেন খান নিখিলকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আয়োজনে ছিল সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও। কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের কণ্ঠে গানসহ কয়েকটি পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে সকাল ১০টার পর থেকে আওয়ামী যুবলীগের মহাসমাবেশে যোগ দিতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যেতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যুব জনতার স্রোতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে আওয়ামী যুবলীগ। দুপুর আড়াইটা থেকে যুব মহাসমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

বিএনপির উদ্দেশ্যে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন আমু বলেন, ‘যারা মনে করছেন ধাক্কা দিলেই সরকারের পতন হয়ে যাবে। যারা মনে করছেন শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে। আজকে তারা দেখুক, আজকের সমাবেশের উপস্থিতি দেখে নিশ্চয়ই আপনাদের চোখ খুলে যাবে। কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন কারো বন্দুকের নল দ্বারা জন্ম হয় নাই। এই দেশের মানুষের আস্থার গহ্বর থেকে আওয়ামী লীগ এবং তার সমস্ত সহযোগী সংগঠন গড়ে উঠেছে। তাই এই তৃণমূল কচু পাতার পানি নয়, আপনাদের কথার ভিত্তিতে আপনার কর্মসূচির ভিত্তিতে সরকার চলে যাবে বা আওয়ামী লীগের পতন ঘটবে, যারা ভাবছেন তারা আহাম্মকের স্বর্গে বাস করছেন। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য যুবলীগসহ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সকল নেতাকর্মীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। যেকোন ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে, এটিই হবে আজকের শপথ।’

ছবি: সারাবাংলা

যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘এখন ওরা ভয় দেখায়। হুমকি মারে। কী হুমকি মারে? ১০ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার পতন ঘটাবে। তারেক জিয়া দেশে আসবে এবং বিএনপি ক্ষমতায় চলে যাবে। আরে পাগলে কি না কয় ছাগলে কি না খায়! ওরা তো পাগল ওরা খুনি। কিভাবে তারেক আসবে? যাবজ্জীবন কারাদন্ড।ও যত কিছু করুক ভয়তে আসবে না। আর খালেদা জিয়া সেও তো কারাদন্ড। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহানুভূতির কারণে তাকে কারাগার থেকে বাসায় দিছে। দেওয়া উচিত না। যারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের ব্যাপারে কোন সহানুভূতি করা যাবে না।’

১০ ডিসেম্বর থেকে আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে শেখ সেলিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পালানোর দল না। ওই তারেক জিয়া পালিয়ে লন্ডনে আজকে ১৫ বছর রয়েছে। ওই প্রিয় ফালু পালাইয়া বিদেশে আছে। হারিছ চৌধুরী বিদেশে পালিয়ে আছে। তোরা পালাতে পারিস, তোরা পালিয়ে পাকিস্তানে যেতে পারিস। মাটি আর মানুষের দেশ, বঙ্গবন্ধুর সৃষ্টি আমরা কোথাও পালাতে জানি না। আর খুব লাফালাফি আরম্ভ করছে—১০ তারিখে শেখ হাসিনার পতন হয়ে যাবে।

সেলিম বলেন, ‘তারেক আর খালেদা জিয়া ছাগলের বাচ্চার মতো লাফাচ্ছে। জীবনে তোরা এদেশের মানুষের ভালবাসা নিয়ে ভোট নিয়ে নির্বাচনে আসতে পারবে না। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুসারে অবাধ সুষ্ঠ নিরপেক্ষ হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন নির্বাচন হয়, বাংলাদেশে হবে।’

যুবলীগকে আগামী দিনে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ সেলিম বলেন, ‘নিজেদের ভিতর ঐক্য গড়তে হবে। এই বৃহৎ জনসভা লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়েছে। তোমরা যদি ঐক্য থাকো ওই ছাগলের বাচ্চারা খালি লাফাবে আর লাফাবে। পারলে দেশ ছেড়ে পালাবে। ওরা কিছু করতে পারবে না।’

সফল আয়োজন করার জন্য যুবলীগকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যুবলীগ কথা দিয়ে কথা রাখে। তার প্রমাণ, এটা যুব মহাসমাবেশ নয়, এটা মহাসমুদ্র। যুব-জনতার মহাসমুদ্র। বাংলাদেশে সব বাগানে আজ যত ফুল ফুটেছে যুবলীগকে সব ফুলের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ৫০ বছর পূর্তিতে যুবলীগকে আমি জানাচ্ছি ৫০ বার অভিনন্দন। এদিকে সেদিকে মানুষ। চারদিকে শুধু যুব জনতার ঢল নেমেছে।’

বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে। খেলা হবে। হবে খেলা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। লুটপাটের বিরুদ্ধে। খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে। আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে। খেলা হবে ভুয়া ভোটার তালিকা এর বিরুদ্ধে। খেলা হবে, তৈরি হয়ে যান। প্রস্তুত হয়ে যান। জবাব দেব।’

যুবলীগের সংগ্রামী ভূমিকার কথা তুলে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেই খালেদা জিয়া তারেকরা এই যুবলীগকে ক্লিনহার্ট অপারেশনের নামে সারাদেশে শত সহস্র যুবলীগের নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। আজকের যুবলীগ আপনার (শেখ হাসিনা) দিকে তাকিয়ে আছে। যে শান্তিময় বাংলাদেশ করেছেন, যে উন্নয়নশীল দেশ করেছেন। সেই বাংলাদেশে যারা আতঙ্ক ছড়াতে চায়। যারা আবার আগুন সন্ত্রাস মানুষ খুন করে বাংলাদেশকে ধ্বংসলীলায় পরিণত করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে যুবলীগ প্রস্তুত রয়েছে দুর্বার গতিতে প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব সমাজকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতির পিতা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। তার আদর্শ সামনে নিয়ে, পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা দিয়েছি। অর্থ্যাৎ ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেই দেশ গড়ার জন্য এখন থেকে যুব সমাজকে কাজ করতে হবে। উৎপাদন বাড়াতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আর দেশের মানুষের কল্যাণ করতে হবে।’

যুবলীগের নেতাকর্মীর উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘একটা আদর্শ নিয়ে জাতির পিতার যে স্বপ্ন সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। যুবলীগের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেটাই হবে সকলের প্রত্যয় ঘোষণা, সেটাই হবে সকলের প্রতিজ্ঞা।’

সুবর্ণজয়ন্তীতে সংগঠনের নেতাকর্মীদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। যুবলীগ গঠনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই উন্নয়নের কাছে সারা বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে একটা বাঁচার সম্ভাবনা পেয়েছে, স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। কারণ এই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে চাই। এই ক্ষেত্রে তরুণরাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তারুণ্যেই সমৃদ্ধি। ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার আমরা তরুণদের জন্যই উৎসর্গ করেছি।’

শেখ হাসিনা তার কারণ তুলে ধরে বলেন, ‘তরুণ সমাজেই পারে দেশকে গড়ে তুলতে। একটি কথা মনে রাখতে হবে, অনেকে আমাদের সমালোচনা করছেন। নানা কথা বলছেন, উন্নয়ন নাকি চোখেই দেখে না। এখন চোখ থাকতে যদি কেউ অন্ধ হয় তাকে তো কিছু দেখানো যায় না। তারা কিন্তু ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যবহার করছে। সবই তো আওয়ামী লীগের দেওয়া। আওয়ামী লীগ সরকারে এসে মোবাইল ফোন জনগণের হাতে তুলে দিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আমলে কী করেছে? জিয়াউর রহমান এরশাদ খালেদা জিয়া সবারই তো একই ইতিহাস। ১৮/১৯টি ক্যু হয়েছে বাংলাদেশে। হাজার সৈনিক অফিসার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে। সেই সঙ্গে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।’

সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতায় এসে জিয়াউর রহমান যুবলীগ নেতা মৌলভী সৈয়দসহ অনেককে হত্যা করেছে সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া শত শত সেনা অফিসার বিমান বাহিনীর অফিসার হত্যা করেছে, তাদের পরিবারও লাশ পায়নি। ঠিক এদেরও লাশ আত্মীয় স্বজন পায়নি। আর খালেদা জিয়া এসে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে হত্যা করেছে। ১৫ আগস্টের হত্যাকারীদের যেমন ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রক্ষা করেছে ওই অপারেশন ক্লিন হার্টে যারা হত্যা করেছে তাদেরও ইনডেমনিটি দিয়ে গেছে। অর্থাৎ খুনিদের লালন-পালন করা এটি ওদের চরিত্র।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যাদের নেতৃত্বে আজকে বিএনপি চলে তারা কে? জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতের কারণে খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত। তার দশ বছরের সাজা হয়েছে। সে হলো বিএনপির নেত্রী। আর তার পরিবর্তে যাকে দিয়েছে সে তো আরও একধাপ উপরে। আমরা দেখি বিএনপির অনেক নেতা মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে কথা বলে, লুটপাটের কথা বলে, দুর্নীতির কথা বলে। তারেক জিয়া- তার শাস্তি হয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের কেসে। তার কেসে আমেরিকা থেকে এফবিআই’র লোক এসে বাংলাদেশে সাক্ষী দিয়ে গেছে। তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায়। মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছর সাজা, ২০ কোটি জরিমানা। আর গ্রেনেড হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারী তার জন্য সে সাজাপ্রাপ্ত। যাদের নেতাই হচ্ছে খুন, মানি লন্ডারিং, অবৈধ অস্ত্র চোরকারবারির আসামি তাদের মুখে আওয়ামী লীগের সমালোচনা শোভা পায় না।’

ছবি: সারাবাংলা

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাজেটের সঙ্গে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেটের দেওয়ার সক্ষমতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘উন্নতি না হলে এত বাজেট আমরা দিতে পারলাম কী করে? আমরা বাংলাদেশে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই।’

তরুণ যুব সমাজের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে তার সরকারের মেয়াদে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার কথা তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ দিয়েছিল, চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। কানাডার ফেডারেল কোর্ট রায় দিয়েছে পদ্মাসেতুতে কোনো দুর্নীতি হয়নি। আবার কানাডার ফেডারেল কোর্টে আরেকটি রায় আছে, সেটি কী? বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন কানাডার ফেডারেল কোর্টই সেই রায় দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। গৃহহীন থাকবে না। আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করেছি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনকালীন আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কাজেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না, সেই লক্ষ্যে তাদেরকে ঘর করে দিচ্ছি।’

মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা দল বাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহনে করে মহাসমাবেশস্থলের দিকে আসেন।

সমাবেশের কারণে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। মহাসমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তৈরি টি-শার্ট, ক্যাপ পরিধান করে উৎসবমুখর আমজ সৃষ্টি করে। ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, ভুভুজেলাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে আনন্দমুখর উৎসব সমাবেশস্থলে যোগ দেন নেতাকর্মীরা।

সারাবাংলা/এনআর/একে


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর