Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘যোগাযোগের সব পথের উন্নয়ন করেছি, এটা আকাশ থেকে পড়েনি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১২ নভেম্বর ২০২২ ১২:১৮

ঢাকা: সারাদেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের নৌপথ, সড়কপথ, রেলপথ, আকাশপথের ব্যাপক উন্নয়ন করেছি, এটা আকাশ থেকে পড়েনি। আমরা বেশিরভাগ কাজ নিজেদের অর্থ দিয়ে করছি। যেন কারও কাছে হাত পেতে চলতে না হয়। নিজের সম্মান নিয়ে, নিজেরা চলবো মাথা উঁচু করে। সম্মানের সঙ্গে বাংলাদেশ চলবে, এই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’

শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে সাভার আশুলিয়া বাজারসংলগ্ন কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড প্রান্তে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাদেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার শুভ ফল দেশের মানুষ পাচ্ছে  উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু করেছি, ভোরবেলা আমাকে ম্যাসেজ পাঠানো হলো আপা কিছু ইলিশ মাছ পাঠালাম। আমি সাড়ে সাতটায় ম্যাসেজ পেলাম, সাড়ে নয়টার মধ্যে মাছ পৌঁছে গেছে। আমরা কেউ টাকা চিবিয়ে খাইনি, গিলেও খাইনি আর নিয়েও যাইনি।’

তবে হ্যাঁ বিএনপি বলবেই, বিএনপির তো অভ্যাসই। কারণ তারেক জিয়া নিজেই যে মানি লন্ডারিং করেছে, এটা আমেরিকার তদন্তেই প্রমাণ হয়েছে। কাজেই তারা নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। তাদের তো কিছুই ছিল না। জিয়াউর রহমান যখন মারা যান, আমরা চল্লিশ দিন টেলিভিশনে দেখেছি ভাঙা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জি ছাড়া কিছুই রেখে যায়নি। কিন্তু পরবর্তীতে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেই এটা হয়েছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এদেশ স্বাধীন করেছেন। আমরা আওয়ামী লীগ আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি। কারণ জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, আমরা সেটাই পূর্ণ করতে চাই। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা রাষ্ট্র চালাচ্ছি বলেই গত ১৩ বছরের মধ্যে এই বাংলাদেশ বদলে গেছে। মুজিববর্ষে আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল একটি মানুষ গৃহহীন ভূমিহীন থাকবে না। আমরা ঘর করে দিচ্ছি। যে সমস্ত এলাকায় বিএনপির আমলে দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকত, মঙ্গা লেগে থাকত এখন কোনো মঙ্গা নেই।’

মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রসঙ্গ তুলে সরকারপ্রধান বলেন, ‘করোনার সময়ে জনগণের কল্যাণে নগদ অর্থ প্রণোদনাসহ কৃষিখাতে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশের মানুষের কল্যাণটাই সবথেকে বড় কথা। দেশের অর্থনীতি যাতে শক্তিশালি থাকে তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। সেই সঙ্গে সবার কাছে আহ্বান করছি, এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। যেহেতু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এখন একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, তারপর করোনা, তারপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন; এর ফলে আজ প্রত্যেকটা জিনিসের পরিবহনের খরচ বেড়ে গেছে। কাজেই এই ক্ষেত্রে নিজেদের ফসল উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন করতে হবে, পুষ্টি নিশ্চয়তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের মাটি, মানুষ আছে আমরা তা করতে পারবো।’

যদি কখনও বিশ্বে কোনো দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, আমাদের বাংলাদেশে যেন কোনমতেই সেই ধাক্কা না লাগে। আমাদের সাবধানতা আমাদেরই নিতে হবে।সেই দিকে সবাই লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

আমরা যেটুকু খরচ করেছি সেটুকু হলো জনগণের কল্যাণে জনগণের স্বার্থে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের খাদ্য কেনা, ক্যানসারের ওষুধ কেনা, জনগণের মঙ্গলের জন্য আমাদের করতে হয়েছে। সার-জ্বালানি, তেল বিদ্যুৎ; যা কিছু আমাদের আমদানি করতে হয় তা কিনতে হচ্ছে নগদ টাকা দিয়ে। তাছাড়া আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান কিনেছি। নদী ড্রেজিং সেটা আমাদের নিজেদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু আমরা বিনিয়োগ করছি এই কারণে; সেটা হলো আমরা যদি অন্য দেশের এক্সিম ব্যাংক থেকে লোন নিই, সুদসহ সেই ডলার পরিশোধ করতে হয়। কাজেই আমাদের ডলার যদি আমরা খরচা করি, আমরা আমাদের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এটা দিচ্ছি। তাতে করে সুদসহ টাকাটা আমাদের দেশের টাকা দেশেই থেকে যায় এবং সেটা লক্ষ্য রেখেই আমরা ৮ বিলিয়ন ডলারের মতো খরচ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন শ্রীলংকা খুব অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়ে তাদেরও কিছু (ডলার) আমরা ধার দিয়েছি। এখানে কিন্তু কোনো পয়সা কেউ তুলে নিয়ে যায়নি। তাদের মনে সবসময় ওইরকম ভয় থাকে, একথা তারা বলে। বিশেষ করে বিএনপি বলবে। বলার কারণ হচ্ছে তাদের নেতা তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছরের কারাদণ্ড পেয়েছে এবং ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছে। সে পলাতক আসামি। কাজেই মানি লন্ডারিং যাদের অভ্যাস তারা খালি জানে টাকাটা বোধহয় সব নিয়েই যেতে হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এদেশের একটা অর্থ অপচয় করে না। প্রতিটি অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, কল্যাণে এবং তাদের ভালো-মন্দ দেখে তার জন্য।’

আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি বলে অনলাইনে যোগাযোগ করতে পাচ্ছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ না হলে এটা হতো না। আমাদের বহু ছেলেমেয়ে অনলাইনে ইনকাম করেও খাচ্ছে। কাজেই আমরা এটাই চাই, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা করেন শেখ হাসিনা।

‘আমরা মেট্রোরেল করছি, বঙ্গবন্ধু টানেল করছি, এক্সপ্রেসওয়ে করছি, সবগুলির জন্য আমাদের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আমাদের এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের জাতির পিতার ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসাবে গড়ে উঠতে পারবে, মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে গণভবন প্রান্তে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন।

সারাবাংলা/এনআর/এমও

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর