Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রকল্প প্রস্তাবের শুরুতেই ২ বারে ব্যয় বাড়ল ৩১৭ কোটি টাকা

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ নভেম্বর ২০২২ ২২:৫১

প্রতীকী সেতু

ঢাকা: রামনাবাদ নদীর ওপর নির্মিত হবে গলাচিপা সেতু। কিন্তু প্রকল্পটি তৈরির পর্যায়েই দুইবারে ব্যয় বেড়েছে ৩১৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রথমে ২০৪ কোটি ৩৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে তিন বছর মেয়াদী একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। কিন্তু প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) প্রথম সভায় প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয় ১২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা এবং দ্বিতীয় পিইসি সভার পর বাড়ে ১৯১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। বর্তমানে তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পটির ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ৫২১ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

বিজ্ঞাপন

‘লেবুখালী-বাউফল-গলাচিপা-আমড়াগাছিয়া জেলা মহাসড়কের ৭০তম কিলোমিটারে রামনাবাদ নদীর ওপর গলাচিপা সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে এমন ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম পিইসি সভা শেষে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংশোধন করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে লেগে যায় প্রায় দুই বছর। আর দ্বিতীয় বার যখন সংশোধিত ডিপিপি আসে তখন এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২১ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিবছর ৮ শতাংশ হারে সড়কটির এএডিটি বাড়বে। সেতু নির্মাণ করা হলে ভ্রমণ সময় হ্রাসসহ যানবাহন পরিচালন ব্যয় বাবদ প্রতিবছর প্রায় ৩৮ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। বরিশাল বিভাগীয় সদর ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সত্যজিৎ কর্মকার সারবাংলাকে বলেন, ‘গলাচিপা সেতুটি নির্মাণ করা হলে বরিশাল বিভাগীয় সদর ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ স্থাপনসহ প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে।’

বিজ্ঞাপন

তবে পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্প তৈরির সময়ই এরকম ব্যয় বৃদ্ধি কাঙ্ক্ষিত নয়। এক্ষেত্রে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দূরদর্শিতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে রেট সিডিউল পরিবর্তনের কারণে যদি ব্যয় বাড়ে তাহলে সেটি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু অন্য কোনো কারণে হলে সেটি পরিকল্পনা কমিশনের আরও গভীরভাবে পর্যক্ষেণ করা উচিত। আমাদের কর্মকর্তারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারা নিশ্চই খুঁটি-নাটি দেখেছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রকল্প তৈরিতেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বাস্তবায়ন পর্যায়ে অবশ্যই ব্যয় আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পটুয়াখালী জেলার সদর ও বাউফল, দশমিনা, গলাচিপা, রাঙ্গাবালী, আমতলী উপজেলা নদী দিয়ে বেষ্টিত। লেবুখালী-বাউফল-গলাচিপা-আমড়াগাছিয়া সড়কটি ঢাকা-মাওয়া- ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পাগলা নামক স্থান হতে শুরু হয়ে বাউফল উপজেলার মধ্যে দিয়ে দশমিনা, গলাচিপা হয়ে পটুয়াখালী জেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়কটি বাউফল, দশমিনা উপজেলার সঙ্গে পটুয়াখালী জেলা সদরে যাওয়ার জন্য ছোট পথ। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখার স্বার্থে রামনাবাদ নদীর ওপর ফেরি সার্ভিস পরিচালিত হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে রামনাবাদ চ্যানেলে দুই লেন বিশিষ্ট ৮৮২ দশমিক ৮১ মিটার দৈর্ঘ্যরে পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এজন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ২০৪ কোটি ৩৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় সেতুটি নির্মাণে। সেইসঙ্গে ২০২০ সালের মার্চ হতে ২০২৩ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর ২০২০ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করে। পুনর্গঠিত ডিপিপিতে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ৩২৯ কোটি ৮৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়। এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ফের ডিপিপি পুনর্গঠন করে। এ পর্যায়ে পুনর্গঠিত ডিপিপিতে ১৯১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়িয় ৫২১ কোটি ২৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- ৮৮২ দমমিক ৮১ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ। এছাড়া ৭ দশমিক ৫৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ১৬০০ মিটার নদী শাসন, ১ দশমিক ৪০ কিলোমিটার নতুন পেভমেন্ট এবং একটি ব্রিজ টোল প্লাজা নির্মাণ করা হবে।

সারাবাংলা/জেজে/পিটিএম

গলাচিপা সেতু রামনাবাদ নদী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর