আর্থিক বৈষম্য কমাতে নিরলস কাজ করছে পিকেএসএফ
১৩ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৫৯
ঢাকা: পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার এনডিসি বলেছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নে এগিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে। কিন্তু সমাজে বৈষম্য, বিশেষ করে আঞ্চলিক বৈষম্য, দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই বৈষম্য দূর করাই আমাদের কাজ।
রোববার (১৩ নভেম্বর ২০২২) পিকেএসএফ দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. নমিতা হালদার বলেন, ‘আবাসন ও নাগরিক সুবিধা খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাজেট বরাদ্দে দেশের ৬টি জেলাকে শতকরা প্রায় ৭৪ ভাগ এবং বাকি ৫৮টি জেলাকে মাত্র ২৬ ভাগ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে কম বরাদ্দ পাওয়া জেলাগুলোর মধ্যে ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও বরগুনা ০ দশমিক ২০ ভাগ করে অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে তিন দশক আগে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয় পিকেএসএফ। দেশের এই শীর্ষ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানটি আজ প্রায় ১ কোটি ৭৬ লক্ষ সদস্যের একটি পরিবার।’
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘শুধু অর্থায়ন নয় বরং উদ্যোগ উন্নয়ন, দক্ষতা উন্নয়ন, ঝুঁকি নিরসন, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুপেয় পানি, কৃষি এবং জলবায়ুর অভিঘাত সবকিছু মাথায় নিয়েই বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে পিকেএসএফ।’
‘সাম্যের সাথে উন্নয়নের পথে’ স্লোগান ধারণ করে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিওবার্তা পাঠান প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান।
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, ‘শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন নয়, প্রতিটি মানুষের মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা পিকেএসএফের মূল লক্ষ্য। পিকেএসএফের উন্নয়ন ধারণার মূলে রয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও সমতাভিত্তিক উন্নয়ন। প্রবৃদ্ধি নয়, আমরা মানব সক্ষমতা উন্নয়নে কাজ করছি।’
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. গওহর রিজভী বলেন, ‘ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সবাই মিলে একসাথে কাজ করতে হবে।’
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বলেন, ‘বর্তমানে পিকেএসএফ-এর কার্যক্রমে যে বৈচিত্র্য এসেছে তা এমনভাবে সমন্বিত করতে হবে যাতে এগুলো টেকসই হয়।’
পিকেএসএফ-এর বহুমুখী কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানব জীবনের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে পিকেএসএফ কাজ করে না।’
১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর পিকেএসএফ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদনের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্দেশ্যে বিশেষায়িত এই প্রতিষ্ঠান জন্ম লাভ করে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় পিকেএসএফের এই সুদীর্ঘ অভিযাত্রাকে স্মরণ করার জন্য এ বছরই প্রথমবারের মতো ‘পিকেএসএফ দিবস’ পালিত হলো।
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের সাবেক চেয়ারম্যান এম সাইদুজ্জামান ও ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন এবং সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউর রহমান, ড. মো. আবদুল করিম ও মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য প্রদান করেন।
সারাবাংলা/জিএস/ইআ