‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না’
১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৩:০৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে উন্নত জীবন পাবে— সেই লক্ষ্যই আমরা বাস্তবায়ন করব।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ‘ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মিরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্স প্রান্তে যুক্ত ছিলেন তিনি।
যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক সময়ের অবহেলিত এই প্রতিষ্ঠানটিকে সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসার দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেবার মানের উন্নয়নের পাশাপাশি এই সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। কারণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের জীবনটা ভালভাবে চলে, সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের। তাই পূর্ণাঙ্গ রেশন এবং ঝুঁকি ভাতা দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টে ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছি। যেহেতু জনবল সংখ্যা বেড়ে গেছে আরও ২০ কোটি টাকা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টে অনুদান দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি সারাজীবন আগুন-ধোঁয়ায় কাজ করতে হয়, বিধায় এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অনেকেই অবসর বয়সে নানারকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হন। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আজীবন রেশন প্রদানের পরিকল্পনাও রয়েছে। আমরা সেই পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করব।’
সরকারের বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের ফলে এই সংস্থার সক্ষমতা ও মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের জীবন বাজি রেখে মানুষের কল্যাণ করা, মানুষকে উদ্ধার করা একটা মহৎ কাজ। তাই ফায়ার সার্ভিসের প্রতিটি সদস্যই দুঃসময়ে বন্ধু হিসাবে মানুষের কাছে প্রতীয়মান।’
‘দুর্ঘটনা ও দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি’— এবারের প্রতিপাদ্য উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস সপ্তাহ পালন করা হয় কয়েকটি লক্ষ্য সামনে রেখে। তাই এবার আপনারা এবিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে ফায়ার সার্ভিস সপ্তাহ পালন করবেন।’
জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাজে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি করা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের মনেবল চাঙ্গা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। রূপকল্প ২০২১ স্থির করে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ইশতেহার দিয়েছিলাম। বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এখন পর্যন্ত একটানা সরকারে আছি। ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং দৃশ্যমান হচ্ছে। আর মানুষ তার সুফল ভোগ করছে।’ ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সামনের দিকে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
করোনা মহামারি, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, আর পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে সারাবিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি মন্দা দেখা দিয়েছে। এই মন্দা মোকাবিলার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। তাই যার যতটুকু জমি আছে উৎপাদন করবেন, যেন বিশ্বের মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশে না পড়ে। তার জন্য সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে, উন্নত জীবন পাবে— সেই লক্ষ্য আমরা বাস্তবায়ন করব।’
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ফায়ার সার্ভিস সপ্তাহের উদ্বোধন ঘোষণা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এরপর মনোমুগ্ধকর প্যারেড প্রদর্শিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বীরত্বপূর্ণ ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অনুষ্ঠানে ৪ ক্যাটাগরিতে ৪৫ ফায়ার ফাইটারকে পদক দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিরপুর প্রান্তে থেকে এ পদক তুলে দেন।
সারাবাংলা/এনআর/এনএস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ