Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এবারও থাকছে না পরীক্ষা, স্কুলে ভর্তি আবেদন শুরু ১৬ নভেম্বর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩৮

ঢাকা: ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে ১৬ নভেম্বর সকাল ১১টা থেকে। গত দুই বছরের (২০২১ ও ২০২২) মতো এবারও স্কুলে ভর্তির জন্য আলাদা কোনো পরীক্ষা দিতে হবে না। অনলাইনে (https://gsa.teletalk.com.bd) আবেদন করে স্কুল ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে ভর্তি হতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন পত্র গ্রহণ চলবে ৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

আবেদন প্রক্রিয়া শেষে লটারির মাধ্যমে শ্রেণি অনুযায়ী নির্বাচন করা হবে শিক্ষার্থীদের। সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি হবে ১০ ডিসেম্বর, বেসরকারি স্কুলে ১৩ ডিসেম্বর। নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রস্তুতি হিসেবে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই ভর্তির যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

ভর্তি প্রক্রিয়ার তোড়জোড় শুরুর তারিখ ঘোষণার পরেই পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানদের ভর্তি করানোর প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন তাদের মা-বাবারা। একইভাবে সরকারি নির্দেশনার আগেই বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া জানানোর বিষয় নিয়েও অসন্তোষ জানান অভিভাবকরা। তবে মাউশি কর্তৃপক্ষ বলছে, অনলাইন আবেদন শেষে লটারি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানোর ফলে কোনো অসম প্রতিযোগিতা এবারও থাকবে না।

মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, একটা সময় দেখা যেতো যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা সন্তানদের প্রাইভেট পড়িয়ে বা কোচিং করিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাতেন। একটা সময় দেখা যেতো যাদের আর্থিক অবস্থা তুলনামূলকভাবে কম তাদের সন্তানরা তেমন কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই পরীক্ষা দিতো। এর ফলে শিক্ষাজীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের একটা অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হতো। সার্বিকভাবে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতাও লক্ষ্য করা যেত। এটি বন্ধ করতে সরকার লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করাচ্ছে। সুতরাং এখানে উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কিছু আর থাকছে না।

তিনি বলেন, ২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল এবারও সেটিই থাকছে। কোনো স্কুল আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারবে না।

বিজ্ঞাপন

মাউশির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জানান, বিভিন্ন শ্রেণীতে ভর্তির জন্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (মহানগর ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের) হালনাগাদ তথ্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপলোড করতে হবে। ওয়েবসাইটের লিঙ্কটি হলো https://gsa.teletalk.com.bd। ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ওই লিঙ্কে প্রবেশ করে তথ্য আপলোড করা যাবে। এর জন্য টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের দেয়া ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। যেসব বেসরকারি স্কুল সরকারি হওয়ার পর জনবল আত্মীকৃত হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানেও এবার সরকারিভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়া
৬ বছর বা তার বেশি বয়সের শিশুরা প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে বলে জানিয়েছে মাউশি। gsa.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের আবেদন পত্র জমা দিতে হবে।

সরকারি ও বেসরকারি উভয় বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা একটি আবেদন পত্রের বিপরীতে পাঁচটি স্কুল নির্বাচন করতে পারবে। আবেদন পত্রের ফি বা মূল্য ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল ফোন থেকে আবেদন পত্রের ফি জমা দেওয়া যাবে।

দেশের সকল মহানগর ও উপজেলার বেসরকারি স্কুলগুলো কেন্দ্রীয় লটারির আওতায় আসবে। তবে যেসব বেসরকারি স্কুল কেন্দ্রীয় লটারির অংশ হবে না, তাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদিত কমিটির মাধ্যমে লটারি করতে হবে বলে জানিয়েছে মাউশি।

আবেদনপত্রে মানতে হবে যেসব শর্ত
সরকারি বিদ্যালয়: ঢাকা মহানগরীর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো তিনটি ভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত থাকবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গ্রুপের পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে। এখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে।

ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয় বার পছন্দ করা যাবে না।

বেসরকারি বিদ্যালয়: ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন কমপক্ষে একটি এবং সর্বোচ্চ তিনটি প্রশাসনিক থানা ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে।

এছাড়া আবেদনকারীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের সময় মহানগর পর্যায়ের জন্য বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা সদরের সদর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে।

এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে। ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয় বার পছন্দ করা যাবে না বলেও জানানো হয়েছে মাউশির নির্দেশনায়।

মাউশি সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬১টি। এতে আসন রয়েছে ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৬টি। আর সরকারি ৪০৫টি স্কুলে আসন ৮০ হাজার ৯১টি।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২১ সাল থেকে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী (প্রথম থেকে নবম শ্রেণি) ভর্তি শুরু করা হয়। এর আগে শুধু প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। তবে দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হতো। নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হতো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।

সারাবাংলা/এসবি/রমু

স্কুলে ভর্তি স্কুলে ভর্তি আবেদন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর