‘সুনির্দিষ্ট করারোপ তামাক নিয়ন্ত্রণে বড় হাতিয়ার’
১৬ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩০
ঢাকা: সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ করা হলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণে বড়ো ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করতে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী অতিদ্রুত একটি শক্তিশালী জাতীয় করনীতি প্রণয়ন প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ও ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথভাবে ‘তামাক কোম্পানির বহুল প্রচারিত রাজস্ব মিথ এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। বুধবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে মূলত দুটি বিদেশি কোম্পানি দেশের তামাক ব্যবসার সিংহভাগ নিয়ন্ত্রণ করেছে। এই কোম্পানিগুলো তাদের বাণিজ্য প্রসারের জন্য আমাদের দেশকে বেছে নিয়েছে। তারা শুধু এদেশ থেকে লভ্যাংশই নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এ দেশে যে রোগের ব্যয়, রোগাক্রান্ত ব্যক্তি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি, পরিবেশের ক্ষতি, তামাক চাষের কারণে অন্যান্য ক্ষতির দায় কোনোভাবেই তারা নেয় না। তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর পণ্য ক্রয় করতে মানুষকে উৎসাহিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা আরও বলেন, সরকার এবং তামাক কোম্পানির লক্ষ্য সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। সরকার ২০৪০ সালে মধ্যেই দেশকে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, অপর দিকে তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ধূমপায়ী বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকারের উদ্দেশ্য সংবিধানের দায়বদ্ধতা, জনস্বাস্থ্য রক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যয় কমানো।আর তামাক কোম্পানির লক্ষ্য মুনাফা অর্জন।
সংবাদ সম্মেলনে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো প্রণয়ন, তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ও শক্তিশালী জাতীয় করনীতি প্রণয়ন, তামাকের ওপরে নির্ভরশীলতা কমিয়ে কর আদায়ের অন্যান্য শক্তিশালী মাধ্যম খুঁজে বের করা, মূল্যস্তর এর সংখ্যা ৪টি থেকে কমিয়ে ২টি করা, খুচরা শলাকা বিক্রয় নিষিদ্ধকরণ, কর আদায় ব্যবস্থা আধুনিকায়ন এবং সকল প্রকার ধোঁয়াবিহীন তামাক পণ্য, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমুহকে রেজিস্ট্রেশন ও করের আওতায় আসার সুপারিশ করা হয়।
বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক -এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডিপার্টমেন্ট অব ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের গবেষক ডা. মাহবুবুস সোবহান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দ্য ইউনিয়নের কনসালটেন্ট ফাহিমুল ইসলাম, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার মো. নাসির উদ্দিন শেখ, ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী ও কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আইই