Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভিসা পেতে জাল নথি দিলে কালো তালিকাভুক্ত হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ নভেম্বর ২০২২ ২৩:০০

চট্টগ্রাম ব্যুরো : মিথ্যা তথ্য ও জাল নথি দিয়ে ভারতের ভিসাগ্রহণের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন। তিনি জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রতিনিধির (দালাল) মাধ্যমে জাল নথি দিয়ে যারা ভারতের ভিসা নেওয়ার চেষ্টা করবে, তাদের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা হবে। ডাটাবেইজের মাধ্যমে তাদের সব তথ্য সংরক্ষণ করা হবে।

ভারতীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা (আইটিইসি) দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর খুলশীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজীব রঞ্জন এ সব কথা বলেন। এদিন আইটিইসি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সহকারি হাই কমিশনার রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘অংশীদার দেশগুলোতে দক্ষতা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে ভারত সরকারের একটি কর্মসূচি হচ্ছে আইটিইসি। বাংলাদেশের সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে পেশাগত কাজে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে। আগামী বছর থেকে আমরা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে শিক্ষার্থীকে এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে সুযোগ দেয়ার চেষ্টা করছি। দুইদেশের সম্পর্কের মধ্যে আমরা মানুষে-মানুষে বন্ধুত্বকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে আসছি। ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশ ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক বন্ধনে আবদ্ধ। দিন দিন আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছে। আইটিইসির মতো কর্মসূচিগুলো দুই দেশের বন্ধনকে আরও জোরালো করছে।’

প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশিদের ভারতের ভিসা দেওয়ার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আমাদের প্রধান মিশন এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেটে সহকারী হাই কমিশনের মাধ্যমে আমরা ভিসা প্রদান করে থাকি। কিন্তু চট্টগ্রামে আমরা সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা প্রক্রিয়ায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ পাচ্ছি। ভারতের ভিসার জন্য আবেদন করার যে কেন্দ্রগুলো আছে সেগুলো স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ভিসাপ্রার্থীদের আবেদন সংগ্রহ এবং পাসপোর্ট সরবরাহের মধ্যেই তাদের কাজ সীমাবদ্ধ। কিন্তু ভিসার আবেদন, নথি যাচাইবাছাই ও ভিসা প্রদানের প্রক্রিয়ায় তাদের কোনো ভূমিকা নেই। একমাত্র সহকারী হাই কমিশনারের কার্যালয় ভিসা প্রদানের ক্ষমতা রাখে।’

বিজ্ঞাপন

‘কিন্তু অপ্রতুল অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে চট্টগ্রামে ভিসাপ্রার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এটা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা চেষ্টা করছি ভিসা আবেদন কেন্দ্রকে আরও বড় পরিসরে ভালো জায়গায় নিয়ে যেতে এবং আরও জনবল নিয়োগ দেয়ার বিষয়টিও আমাদের পরিকল্পনায় আছে।’

স্থানীয় প্রতিনিধিদের (দালাল) মাধ্যমে ভিসার আবেদন পূরণের বিষয়েও উষ্মা প্রকাশ করে সহকারী হাইকমিশনার বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় তারা ভিসাপ্রার্থীদের আবেদন ফরম পূরণের জন্য প্রচুর টাকা নেয় এবং জাল নথি যুক্ত করে দেয়। এক্ষেত্রে ভিসাপ্রার্থীদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। আমি ভিসাপ্রার্থীদের বলব- স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন না। জাল নথি শুধু আপনাকে আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, আপনাকে ভিসাও দেয়া হয় না। এছাড়া বারবার জাল নথি দিয়ে একই আবেদন করার কারণে আপনাকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে।’

‘যারা জাল নথি দিয়ে ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করেন, এক বা একাধিকবার, আমরা তাদের নাম-ঠিকানাসহ সব তথ্য ডাটাবেইজে সংরক্ষণ করে রাখার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ভিসা কেন্দ্রের সামনে আমরা অভিযোগ-পরামর্শ বাক্স স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া সহকারী হাইকমিশনের কার্যালয়ের একটি ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া থাকবে, যেখানে আবেদনকারী তার অভিযোগের বিষয় জানাতে পারবেন।’

ভিসা প্রক্রিয়ায় অনিয়মের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করে রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘আপনার ভিসা সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য কিংবা সহযোগিতার জন্য আমার কাছে আসুন। একটি সুন্দর, স্বচ্ছ ও শক্তিশালী ভিসা প্রক্রিয়া গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশীদের সর্বোত্তম সেবা দেয়ার জন্য আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা চাই। সবার সহযোগিতা ছাড়া আমরা কখনোই সফল হতে পারব না।’

ভারতের ২৫টি আইটিইসি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সংর্বধনায় অংশ নেন এবং কয়েকজন তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

সারাবাংলা/আরডি/একে

টপ নিউজ ভারতীয় হাইকমিশনার ভারতের ভিসা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর