Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগাছার জঙ্গলে পেঁপে চাষ, বছরে ১০ লাখ টাকা আয়ের আশা

সোহেল রানা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৪১

দিনাজপুর: লালমাটির উঁচু পাহাড়, তাতে ঘন আগাছার জঙ্গল। একসময় সেই জঙ্গলে মানুষের যাতায়াত ছিল না। সন্ধ্যার পরে সেখানে ঘটত ডাকাতি। তবে সেই জঙ্গল এখন রূপ পেয়েছে দৃষ্টিনন্দন পেঁপে বাগানে। এই বাগান থেকেই বছরে ১০ লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন চাষিরা।

সারিবদ্ধ গাছে ঝুলে আছে পেঁপে। পেঁপের বাম্পার ফলনে আগ্রহ বাড়ছে অন্যদের। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার নিতাইশা মোড়ে গড়ে উঠেছে এই পেঁপে বাগান। দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা সবার নজর কাড়ছে এই বাগান। স্থানীয় বদরুল আলম বুলু ও নাজিমুদ্দিন এই পেঁপের চাষ করেছেন। বাগানটিতে কর্মসংস্থান হয়েছে দু’জন শ্রমিকেরও।

বিজ্ঞাপন

প্রায় ৪ বছর আগে নিজ বাড়িতে ছোট পরিসরে ‘রেডলেডি’ জাতের পেঁপে চাষ করে সফলতা পান বুলু। সেই সফলতার অনুপ্রেরণায় নাজিমুদ্দিন নামের একজনকে সঙ্গে নিয়ে ‘টপলেডি’ জাতের পেঁপে চাষ করেন তারা। এই পেঁপে চাষের জন্য ৪০ হাজার টাকা মূল্যে ২ বছরের জন্য একখণ্ড জমি লিজ নেন তারা।

বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সাড়ে ৭০০ পেঁপের গাছ আছে বাগানটিতে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ধরে আছে বিভিন্ন সাইজের পেঁপে। কিছু পেঁপে হালকা হলুদ বর্ণ হয়েছে। তবে অধিকাংশ পেঁপে গাঢ় সবুজ অবস্থায় ঝুলে আছে। হলুদ বর্ণ ধারণ করা পেঁপেগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করছে দু’জন শ্রমিক। গাছগুলোতে সর্বোচ্চ ২ কেজি ওজনের পেঁপে ধরে। এসব পেঁপে যাচ্ছে ঘোড়াঘাটসহ আশপাশের উপজেলার ফলের দোকানগুলোতে।

বগুড়া থেকে এই হাইব্রিড জাতের ‘টপলেডি’ পেঁপের চারা সংগ্রহ করেছেন বুলু। ২৫ টাকা পিছ দরে ৮০০ চারা কিনেছিলেন। তারমধ্যে নানা কারণে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫টি চারা নষ্ট হয়ে যায়। দু’বছর পর্যন্ত ফল দেবে এই পেঁপের গাছ। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৫০ কেজি ফল পাবার প্রত্যাশা বদরুল আলম বুলু ও নাজিমুদ্দিনের।

বিজ্ঞাপন

বদরুল আলম বুলু বলেন, ‘আমি কৃষি ডিপ্লোমা শেষ করে দীর্ঘদিন চাষাবাদ নিয়ে কাজ করছি। এই পেঁপে বাগানটি করতে আমাদের প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা দু’বছরে এসব গাছ থেকে আমরা প্রায় ৮০ হাজার কেজি পেঁপে সংগ্রহ করতে পারব। টপলেডি জাতের এসব পেঁপে পাঁকা অবস্থায় খেতে বেশ মিষ্টি। প্রাথমিকভাবে আমরা ১৪ থেকে ১৬‘শ টাকা মণ দরে স্থানীয় ফলের দোকান ও সবজির দোকানে পেঁপে বিক্রি করছি। তাতে করে আমাদের এই বছর ১০ লাখ টাকা লাভ হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই আমাদের বাগানে আসছেন এবং পেঁপের চাষে আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছেন। পেঁপে চাষে কৃষি বিভাগ আমাদের বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।’

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইখলাছ হোসেন সরকার বলেন, ‘ঘোড়াঘাটের আবহাওয়া ও মাটি বিভিন্ন জাতের পেঁপে চাষের জন্য বেশ উপযোগী। বর্তমানে এই উপজেলায় ২ হেক্টর জমিতে পেঁপের চাষ হচ্ছে। পেঁপের তেমন কোন রোগবালাই নেই। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে পেঁপে মিলিবাগ রোগে আক্রান্ত হয়। নিয়মিত এই রোগের প্রতিরোধক কিটনাশক স্পে করলে মিলিবাগ থেকে পেঁপেকে রক্ষা করা সম্ভব। আমরা পেঁপে চাষিদেরকে নানা ভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি।’

সারাবাংলা/এমও

পেঁপে চাষ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

কানপুরে প্রথম দিনে বৃষ্টির দাপট
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৫

সম্পর্কিত খবর