পরিবারকে খুঁজছেন স্মৃতি হারানো আবুল হাশেম
১৯ নভেম্বর ২০২২ ০৮:৩৪
কক্সবাজার: জেলা শহরের বদর মোকাম জামে মসজিদের অজুখানায় বৃদ্ধ আবুল হাশেমকে গোসল করতে দেখা যায়। চুল-দাঁড়ি আর পোশাকে দেখে বোঝা যায় তিনি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলার পর কিছু সময়ের জন্য সেই ভাবনা পাল্টে যায়। শিক্ষিত, মার্জিত ও ভদ্র লোকদের মতো কথা বলেন তিনি। ৫৫ বছর (আনুমানিক) বয়সী এই ব্যক্তির বাবা-মায়ের নাম জানা থাকলেও আর কিছুই মনে করতে পাড়েন না।
সম্প্রতি চুল-দাঁড়ি কাটিয়ে স্বাভাবিক করা হয় হাশেমকে, দেওয়া হয় খাবার ও পোশাক। তার জীবনের গল্প শুনতে গিয়ে জানা যায়, তিনি সত্যিই একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ। যদিও এই মুহূর্তে সুস্থ আছেন তিনি। বাবা আব্দুল রাজ্জাক, মা আছিয়া খাতুন ও নিজের নাম বলতে পারলেও অন্য কিছু মনে নেই। যার কারণে তিনি পরিবারকে খুঁজে পাচ্ছেন না।
তিনি আরও জানান, বছরের বেশিরভাগ সময় মাথা ঠিকমতো কাজ করে না। তবে সব কষ্ট-যন্ত্রণা নিজের মধ্যে রাখলেও কারও ক্ষতি করেন না কখনো।
কিভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন হলেন— এমন প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি হাশেম। তিনি জানান, প্রায় ৩০-৩৫ বছর আগে কে বা কারা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় আখাউড়ার কেল্লা বাবার মাজারে রেখে চলে যায়। ওখানে তিনি দীর্ঘ ৮ বছর উম্মাদ অবস্থায় ছিলেন। এরপর কিছুটা সুস্থ হন। কিন্তু তার আর কোনো স্মৃতি মনে নেই। এছাড়া তার এই সুস্থতাও বেশিদিন থাকে না। কখন যে প্রচণ্ড মাথা ব্যথার মধ্য দিয়ে সবকিছু অস্বাভাবিক হয়ে যায় তা নিজেও বুঝতে পারেন না তিনি।
কক্সবাজার শহরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকাসহ রাস্তায় থাকা এই মানুষটি এখন খুঁজে ফিরছেন তার পরিবারকে। লিখতে-পড়তে জানা আবুল হাশেম জানান, পরিবারের সন্ধানে যে যেখানে বলছে সেখানেই যাচ্ছেন। মা-বাবা, ভাই-বোন কারও চেহারা মনে পড়ছে না তার। তারা আদৌ বেঁচে আছে কি না তাও জানেন না তিনি।
শৈশবের স্মৃতি ফিরে পাওয়ার জন্য সবসময় প্রার্থনা করেন আবুল হাশেম। যেন ফিরতে পারেন পরিবারের কাছে। হয়তো এখনো অপেক্ষায় আছে তার পরিবার।
সারাবাংলা/এনএস