ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এই পদে (সাধারণ সম্পাদক) না থাকলে সালাম দিতেও কষ্ট লাগবে? কেউ আবার দেখছে কি না ভেবে মুখটা আরেক দিকে ঘুরিয়ে রাখবেন— সেটি তো দেখেছি জলিল ভাইয়ের সময়। তাই আওয়ামী লীগের মধ্যে শৃঙ্খলাটা রক্ষা করা সবার দায়িত্ব।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত দফতর উপ-কমিটির প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সাদামাটা সম্মেলন করব। কিন্তু উপস্থিত সাদামাটা হবে না। ব্যাপক উপস্থিতি হবে। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এ মাসে এমনি একটা জাগরণ থাকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বাধীনতার স্বপক্ষে সেটা আরও বেগবান হবে সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। এই সম্মেলন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ এবং এই সম্মেলনে আমাদের আগামী ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অভিমুখে নিয়ে যাবে। এখান থেকেই আমরা প্রস্তুতি নেব। সেই বিজয়ের শোভাযাত্রাকে আমরা আগামী বছরের বিজয়ের বন্দরে নিয়ে যাব। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে এই কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
দলের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, ‘এক কমিটির কেউ যাতে অন্য কমিটিতে থাকতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কেউ চিরদিন নিজের অবস্থানে থাকব না। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা তৈরি করে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। পাশে একটা বড় রুম আছে, যারা বসেন প্রয়োজনে তারা বসবেন। কাউকে দরকার হলে সামনের চেয়ারে আছে, তাদের বসার ব্যবস্থা করব। সেখানে বসে কথাবার্তা বলা যায়। সবাই যদি এই রুমটা (সভাপতিমণ্ডলীর) দখল করেন, আমাকে দেখে ভয়ে থাকেন— এটা তো ঠিক না। আমাকে দেখে উঠতে হবে, বের হয়ে যেতে হবে, হুট চলে যেতে হবে— এমন অবস্থা তো আর চিরদিন থাকবে না। এক সময় আসবে, আমি এই পদে না থাকলে সালাম দিতেও কষ্ট লাগবে। কেউ আবার দেখছে কি না মুখটা আরেকদিকে ঘুরিয়ে রাখবেন— সেটাও তো দেখেছি জলিল ভাইয়ের সময়।’
এসব বন্ধ করতে সবার সহযোগিতা কামনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগ একটা দল, যুদ্ধ করে পার্টি অফিসে ঢুকতে হয়। এই লড়াই করা আর এই বয়সে সম্ভব নয়। এবিষয়ে সবাইকে সুশৃঙ্খলা হতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্রে আছে, যত কাউন্সিলর হবে তার ডাবল ডেলিগেট হবে। এর বাইরে একটাও দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই, কোনো সুযোগ নেই। কাউন্সিলর যদি আড়াই হাজার হয় ডেলিগেট হবে ১৬ হাজার। তবে এর বাইরে আমরা কিছু আমন্ত্রিত অতিথির কার্ড দেবে। যেটা জেলা পর্যায়ে ভাগ করে দেব, আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য। এটা নির্দিষ্ট করে কার্ড দেওয়া হবে।’
কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার নিশ্চিত করতে ৮টি বিভাগের অন্তর্গত বিভাগীয় টিম গঠম করা হবে এবং এসব কার্ড বিতরণ জাতীয় সম্মেলনের তিনদিন আগে থেকেই কাউন্সিলর ও ডেইলিগেট কার্ড হস্তান্তর করা হবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রতিনিধিদের মাঝেও বলেও অবহিত করা হয় বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের দফতর উপ-কমিটির আহ্বায়ক ড. অনুপম সেনের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, মো. সাখাওয়াত হোসেন শফিক, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, আনোয়ার হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, সানজিদা খানম, আনিসুর রহমান, সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম প্রমুখ। সভাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান।